তারা ব্যবসায় শিক্ষা শাখার পরীক্ষার্থী, প্রবেশপত্র এসেছে মানবিকের

ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় পড়াশোনো করেছে দুই শিক্ষার্থী। কিন্তু পরীক্ষার আগে প্রবেশপত্র এসেছে মানবিকের। বৃহস্পতিবার দুপুরে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার জাগীর উচ্চবিদ্যালয় প্রাঙ্গণে
ছবি: প্রথম আলো

মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার জাগীর উচ্চবিদ্যালয়ে নবম ও দশম শ্রেণিতে ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় পড়াশোনা করেছে দুই শিক্ষার্থী। আসন্ন মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষায় ওই বিদ্যালয় থেকে তাদের অংশ নেওয়ার কথা। এর মধ্যে ঘটেছে বিপত্তি। পরীক্ষার প্রবেশপত্রে ও রেজিস্ট্রেশন কার্ডে ব্যবসায় শিক্ষা নয়, উল্লেখ রয়েছে মানবিক শাখা।

ওই দুই পরীক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকেরা ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, শিক্ষকদের ভুলে পরীক্ষার্থীদের প্রবেশপত্র ও রেজিস্ট্রেশন কার্ডে ভুলে ব্যবসায় শিক্ষার বদলে মানবিক লিপিবদ্ধ হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে পরীক্ষার প্রবেশপত্র ও রেজিস্ট্রেশন কার্ড সংশোধনে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত আবেদন করা হয়েছে।

ভুক্তভোগী দুই পরীক্ষার্থী হলো আবদুল কাদের ও সুমাইয়া আক্তার। তারা জানায়, ৩০ এপ্রিল এসএসসি পরীক্ষা শুরু হবে। দুই বছর আগে বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণিতে ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় ভর্তি হয় তারা। দুই বছর তাঁরা এই শাখাতেই পড়ালেখা করেছে। এমনকি ব্যবসায় শিক্ষার কয়েকটি বিষয়ে প্রাইভেট পড়েছে এবং টেস্ট পরীক্ষাও দিয়েছে। তবে দুই দিন আগে পরীক্ষার প্রবেশপত্র ও রেজিস্ট্রেশন কার্ড পাওয়ার পর দেখা যায়, তাতে লেখা রয়েছে মানবিক শাখা। শিক্ষকেরা এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি বলে পরীক্ষার্থীদের অভিযোগ।

পরীক্ষার্থী আবদুল কাদের বলে, ‘এসএসসির টেস্ট পরীক্ষাও ব্যবসায় শিক্ষা বিষয়ে দিয়েছি। পরীক্ষার প্রবেশপত্রে ও রেজিস্ট্রেশন কার্ডে ব্যবসায় শিক্ষা শাখার বদলে মানবিক লেখা দেখি। পরে স্যারদের (শিক্ষক) বিষয়টি জানালে তাঁরা বলেন, এখন কিছু করার নেই। মানবিক শাখার বিষয়েই পরীক্ষা দিতে হবে। দুই বছর এক বিভাগে পড়াশোনা করলাম। এখন অন্য বিভাগে পরীক্ষা দিতে হবে কেন? ব্যবসায় শিক্ষায় পরীক্ষা দিতে না পারলে, পরীক্ষায় পাস করতে পারব না।’

দুই পরীক্ষার্থীর অভিভাবকেরা জানান, এই পরিস্থিতিতে তাঁদের সন্তানদের পরীক্ষা দেওয়ার বিষয়টি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। পরীক্ষার্থী সুমাইয়া আক্তারের মা রোজিনা আক্তার বলেন, এত দিন তাঁর মেয়ে যে শাখায় পড়াশোনা করেছে, এখন অন্য শাখায় পরীক্ষা দিতে হবে। তাঁর মেয়ে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোশারফ হোসেন বলেন, নবম শ্রেণিতে রেজিস্ট্রেশনের সময় শিক্ষার্থীদের দেওয়া তথ্যই লিপিবদ্ধ করা হয়। এ বিষয়ে উচ্চমাধ্যমিক ও শিক্ষা বোর্ডে যোগাযোগ করা হলে সংশোধনের সুযোগ নেই বলে জানিয়েছে। এখন প্রবেশপত্র ও রেজিস্ট্রেশন কার্ড অনুযায়ী ওই দুই পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা দিতে হবে।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আবদুল লতিফ বলেন, তিনি ঢাকায় থাকায় পরীক্ষার প্রবেশপত্রে ও রেজিস্ট্রেশন কার্ড সংশোধনের বিষয়ে লিখিত আবেদন পাননি। এ বিষয়ে কী করা যায় খোঁজখবর নিয়ে দেখবেন।