তেঁতুলিয়ায় টানা আট দিন দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা, মৌসুমের প্রথম মৃদু শৈত্যপ্রবাহ
দেশের সর্বোত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে দিন দিন নামছে তাপমাত্রার পারদ, জেঁকে বসছে শীত। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়ায় সারা দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। এর মাধ্যমে এলাকাটিতে চলতি মৌসুমের প্রথম মৃদু শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়েছে।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্রে জানা যায়, টানা আট দিন ধরে তেঁতুলিয়ায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হচ্ছে। আজ সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়ায় বাতাসে আর্দ্রতা ছিল ৭৮ শতাংশ এবং বাতাসের গতিবেগ ছিল প্রতি ঘণ্টায় ১০ থেকে ১২ কিলোমিটার। রাতের শেষভাগে কিছুটা কুয়াশা থাকলেও সকাল সাতটার দিকে ঝলমলে রোদ দেখা দিয়েছে, যা জনজীবনে কিছুটা স্বস্তি নিয়ে এসেছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, দেশের কোনো এলাকায় ২ থেকে ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা থাকলে অতি তীব্র শৈত্যপ্রবাহ, ৪ থেকে ৬ ডিগ্রি থাকলে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ, ৬ থেকে ৮ ডিগ্রি থাকলে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ, আর ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি থাকলে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যায়।
স্থানীয় লোকজন জানান, হেমন্তের শেষ দিকে উত্তরের এই এলাকায় প্রায় প্রতিদিন সন্ধ্যার পর থেকে কুয়াশা নামে, যা পরদিন সকাল পর্যন্ত থাকে। সঙ্গে যুক্ত হয় হিমেল বাতাস। তবে গতকাল বুধবার রাতের দিকে কুয়াশার তীব্রতা কমতে থাকে। হালকা কুয়াশার মধ্যে প্রবেশ করা উত্তরের ঝিরিঝিরি হিমেল বাতাস রাত থেকে সকাল পর্যন্ত কনকনে শীত তৈরি করেছে। এর আগে, গতকাল বুধবার দিনের ঝলমলে রোদে তেঁতুলিয়ায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৮ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আজ সকালে পঞ্চগড় সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, হালকা কুয়াশার মধ্যে সূর্য উঁকি দিয়েছে। হিমেল বাতাসে মানুষ কনকনে শীত অনুভব করছেন। এরই মধ্যে অনেকেই গরম কাপড় জড়িয়ে প্রয়োজনীয় কাজে বের হয়েছেন। কেউ ফসলি জমিতে হালচাষ করছেন, কেউ খেত থেকে সবজি তুলে বাজারে নিয়ে যাচ্ছেন।
পঞ্চগড় পৌরসভার তুলারডাঙ্গা এলাকায় কৃষক আতাউর রহমান (৬০) ফসলের খেত থেকে সবজি বাজারে নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তিনি বলেন, ‘সকালে যখন সবজি তুলতে আসি, তখন ঠান্ডায় হাত-পা কোকরা (অবশ) হয়ে যাচ্ছিল। তবে সকাল সকাল রোদ ওঠায় এখন ভালো লাগছে।’
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্র নাথ রায় মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, কুয়াশা কিছুটা কমলেও উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে বয়ে আসা হিম বাতাসে এই এলাকায় বেশি শীত অনুভূত করছে। ডিসেম্বর শেষ ও জানুয়ারির শুরুর দিকে এ এলাকায় মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।