পাগলা মসজিদের দানবাক্সে রেকর্ড ১২ কোটি টাকা
কিশোরগঞ্জের পাগলা মসজিদের ১৩টি সিন্দুক খুলে দিনভর গণনা করে রেকর্ড ১২ কোটি ৯ লাখ ৩৭ হাজার ২২০ টাকা পাওয়া গেছে। এ নিয়ে মসজিদের ব্যাংক হিসাবে ১০৩ কোটি টাকা জমা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক।
প্রতি চার মাস পর জেলা শহরের নরসুন্দা নদীতীরের পাগলা মসজিদের দানের সিন্দুকগুলো খোলা হয়। মনোবাসনা পূরণের আশায় এখানে টাকাসহ নানা সম্পদ দান করেন মানুষ। শনিবার সকাল সাতটা থেকে পাঁচ শতাধিক লোক ৩২ বস্তা টাকা গণনা করেন। প্রায় ১৩ ঘণ্টা গণনা শেষে টাকার অঙ্ক জানা যায়। টাকার পাশাপাশি স্বর্ণালংকার ও বৈদেশিক মুদ্রাও পাওয়া গেছে সিন্দুকে।
এর আগে চলতি বছরের ১২ এপ্রিল দানবাক্সগুলো খোলা হয়। ওই সময় ২৮ বস্তা টাকা গণনার পর ৯ কোটি ১৭ লাখ ৮০ হাজার ৬৮৭ টাকাসহ বৈদেশিক মুদ্রা, সোনার গয়না ও হীরা পাওয়া গিয়েছিল।
কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, জেলা প্রশাসক ও মসজিদ কমিটির সভাপতি ফৌজিয়া খান, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী ও দানবাক্স খোলা কমিটির আহ্বায়ক, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এরশাদুল আহমেদের উপস্থিতিতে শনিবার সকালে ১৩টি সিন্দুক খোলা হয়। সিন্দুকগুলো থেকে মোট ৩২ বস্তা টাকা মেঝেতে ঢেলে গণনার কাজ করা হয়।
জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান বলেন, পাগলা মসজিদ ও ইসলামি কমপ্লেক্সের খরচ চালিয়ে দানের বাকি টাকা ব্যাংকে জমা রাখা হয়। এ পর্যন্ত ৯১ কোটি টাকা ব্যাংকে জমাসহ অনলাইনের দানের আরও পাঁচ লক্ষাধিক টাকা জমা আছে। আজকের টাকাও ব্যাংকে জমা দেওয়া হয়েছে। এসব টাকার লভ্যাংশ থেকে জেলার বিভিন্ন মসজিদ, মাদ্রাসা ও এতিমখানায় অনুদানের পাশাপাশি অসহায় ও জটিল রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের সহায়তা করা হয়।
সিন্দুক খোলা থেকে ব্যাংক পর্যন্ত এসব টাকা নিরাপদে পৌঁছে দিতে পুলিশ তৎপর ছিল বলে জানান পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী। তিনি বলেন, গণনা ছাড়াও বাকি দিনগুলোতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর লোকজন সিন্দুকের নিরাপত্তায় দায়িত্ব পালন করেন।
কিশোরগঞ্জ শহরের ঐতিহাসিক স্থাপনার মধ্যে পাগলা মসজিদ অন্যতম। শহরের পশ্চিমে হারুয়া এলাকায় নরসুন্দা নদীর তীরে মসজিদটি গড়ে ওঠে। টাকাপয়সা, স্বর্ণালংকার ছাড়াও গবাদিপশুসহ বিভিন্ন ধরনের জিনিস মসজিদটিতে দান করার নজির আছে।