ফরিদপুরে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত ১৫, বাড়িঘর ভাঙচুর

ফরিদপুরের সালথায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের দুই পক্ষ গতকাল সন্ধ্যায় ইফতারের পর দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েনছবি: প্রথম আলো

ফরিদপুরের সালথায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে স্থানীয় আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হন। সংঘর্ষের সময় বেশ কয়েকটি বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়েছে। গতকাল রোববার সন্ধ্যা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত উপজেলার রামকান্তুপুর ইউনিয়নের মদনদিয়া এলাকায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এলাকাবাসী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, এলাকার আধিপত্য বিস্তার নিয়ে রামকান্তপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও উপজেলা কৃষক লীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মো. ইশারত হোসেনের সঙ্গে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সভাপতি ইমারত হোসেনের বিরোধ চলে আসছিল।

ইশারত ও ইমারত মামাতো-ফুফাতো ভাই। তাঁরা দুজন গত ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। নির্বাচনে ইশারত চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এর পর থেকে তাঁদের বিরোধ আরও তীব্র হয়। এই বিরোধের জেরে ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ১৫ মার্চ ইমারতের সমর্থক ফজলু মাতুব্বরের সঙ্গে ইশারতের সমর্থক ওমর মোল্লার কথা-কাটাকাটি ও মারামারির ঘটনা ঘটে। ঘটনাটি নিয়ে কয়েক দিন ধরে ওই এলাকায় উত্তেজনা চলছিল।

গতকাল সন্ধ্যায় ইফতারের পর উভয় পক্ষের কয়েক শ সমর্থক দেশীয় অস্ত্র ঢাল, টেঁটা ও ইট নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। সন্ধ্যা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত উভয় পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় চলে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া। এ সময় পুরো এলাকায় সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হন। আহত ব্যক্তিদের ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

অন্যদিকে সংঘর্ষের সময় হামলা চালিয়ে ইশারত, মিরাজ, ফজলু, বাশার মাস্টার, ওমর মোল্লা ও ইসমাইলের বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়েছে। অগ্নিসংযোগ করা হয় পাটকাঠির গাদায়।

গতকাল রাত ১১টার দিকে সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল নগরকান্দা) মো. আসাদুজ্জামান বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শটগানের ১১টি গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে ৬টি টেঁটা, ১০টি কাতরা, ১১টি বাঁশের লাঠি, ৫টি ঢাল ও ১টি রামদা উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় ১১ জনকে আটক করা হয়েছে। ইউপির চেয়ারম্যান ইশারত হোসেনসহ সংঘর্ষে জড়িত অন্যদের আটকে অভিযান চলছে।

সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ফায়েজুর রহমান আজ সোমবার সকালে বলেন, পরিস্থিতি এখন পুলিশের নিয়ন্ত্রণে আছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ঘটনায় একটি পক্ষ মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে।