সীতাকুণ্ডে সর্বজনীন পেনশন স্কিম চালু করতে এসে ফিরে গেলেন শতাধিক ব্যক্তি

সার্ভার সমস্যায় সর্বজনীন পেনশন স্কিমের জন্য নিবন্ধন কার্যক্রম বন্ধ আছে। বুধবার দুপুরে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলা পরিষদ কার্যালয়েছবি: কৃষ্ণ চন্দ্র দাস

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ে সর্বজনীন পেনশন স্কিমের জন্য নিবন্ধন (রেজিস্ট্রেশন) করতে আসেন রাজিয়া সুলতানা (৪৮) নামের একজন শিক্ষক। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর তাঁকে জানিয়ে দেওয়া হয় সার্ভার কাজ করছে না। ফলে নিবন্ধন করা যাবে না। এরপর তিনি মন খারাপ করে চলে যান।

শুধু রাজিয়া সুলতানা নন, উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ে আজ বুধবার দুপুরে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, গ্রাম পুলিশ সদস্যসহ শতাধিক ব্যক্তি সর্বজনীন পেনশন স্কিম চালু করার জন্য নিবন্ধন করতে এসে ফিরে গেছেন। এ ছাড়া বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের স্থাপিত নিবন্ধন বুথগুলোতেও সেবাগ্রহীতারা সেবা না পেয়ে ফিরে যান।

রাজিয়া সুলতানা সীতাকুণ্ডের টেরিয়াইল উচ্চবিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক। তিনি প্রায় ১০ কিলোমিটার দূর থেকে উপজেলা সদরে এসেছিলেন সর্বজনীন পেনশন স্কিম চালু করতে। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, আজ সকাল থেকেই তাঁরা নিবন্ধন কার্যক্রম করতে পারছেন না। যতবার তাঁরা নিবন্ধন করার চেষ্টা করেছেন, ততবারই একটি বার্তা (মেসেজ) দেখাচ্ছে। তা হলো ‘সার্ভার সমস্যার কারণে রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। দ্রুত এই সমস্যার সমাধানের প্রচেষ্টা চলছে। সাময়িক অসুবিধার জন্য দুঃখিত।’

আজ বেলা ১টার দিকে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ের নিচতলায় নিবন্ধন বুথে চারজন নিবন্ধন করার কাজ করতে বসে ছিলেন। সেবাগ্রহীতা হিসেবে ছয়জন গ্রাম পুলিশ সদস্য ও আটজন শিক্ষক অপেক্ষা করছিলেন। সেখানে কথা হয় শহিদুল ইসলাম নামের একজনের সঙ্গে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, সকাল ১০টার দিকে তাঁরা কাজ শুরু করেন। প্রথম সেবাগ্রহীতার রেজিস্ট্রেশন করতে গিয়েই দেখতে পান সার্ভার সমস্যা। তাঁরা মনে করেছিলেন অল্প সময়ে সেটির সমাধান হবে। তাই সেবাগ্রহীতাদের ফিরিয়ে দেননি। কিন্তু দীর্ঘক্ষণ সমস্যার সমাধান না হাওয়ায় পরবর্তী সময়ে দুঃখ প্রকাশ করে তাঁদের আজকের জন্য ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আজ সারা দিনে একটি নিবন্ধনও করা যায়নি।

উপজেলা সহকারী প্রোগ্রামার আবদুর রহিম প্রথম আলোকে বলেন, গত দুই দিনে ২৭৯ জনকে সর্বজনীন পেনশন স্কিমের আওতায় আনা হয়েছে। আজ সকাল থেকে সার্ভারে সমস্যা শুরু হয়। এখন অপেক্ষা করা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। সার্ভার সমস্যার সমাধান হলে আবারও তাঁরা কাজ শুরু করবেন।

সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কে এম রফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, তিনি দাপ্তরিক কাজে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে রয়েছেন। তবে তিনি জেনেছেন, সারা দেশের সার্ভার সমস্যা হয়েছে। তাই সারা দেশের মতো সীতাকুণ্ডেও আজকে রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম করা যায়নি। তবে যাঁরা রেজিস্ট্রেশন করতে এসেছেন, তাঁদের উদ্বুদ্ধ করার বিষয়ে সভা করা হয়েছে। যাতে সেবাগ্রহীতারা তাঁদের আশপাশে লোকজনকে পেনশন স্কিমের আওতায় আসার জন্য উদ্বুদ্ধ করতে পারেন।