চট্টগ্রামের আসনটিতে বিএনপি কেন প্রার্থী দেয়নি, ঘোষণা কবে
চট্টগ্রামের ১৬টি সংসদীয় আসনের মধ্যে ১৫টিতে প্রার্থী ঘোষণা করেছে বিএনপি। তবে এখন পর্যন্ত একটি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়নি। আসনটি হলো চট্টগ্রাম–১৪ (চন্দনাইশ-সাতকানিয়া আংশিক)। এ আসনে কে মনোনয়ন পাচ্ছেন, তা নিয়ে দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে চলছে নানা আলাপ-আলোচনা।
চট্টগ্রামের ১৫টি উপজেলা ও ৩৪টি থানা এলাকা নিয়ে ১৬টি সংসদীয় আসন। এর মধ্যে নগরের ১৬টি থানা এলাকায় আসন রয়েছে ৪টি। অন্য ১২টি আসনের মধ্যে ৭টি উত্তর চট্টগ্রাম ও ৫টি দক্ষিণ চট্টগ্রামে।
মনোনয়নপত্র সংগ্রহের নির্ধারিত সময়ের প্রায় শেষ পর্যায়ে এসেও এখন পর্যন্ত চট্টগ্রাম-১৪ আসনে প্রার্থী চূড়ান্ত করেনি বিএনপি। যদিও গতকাল শনিবারও চট্টগ্রামের দুটি আসনে প্রার্থী পরিবর্তন করা হয়। সীতাকুণ্ড আসনে উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী সালাউদ্দিনের পরিবর্তে বিএনপির সাবেক যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরীকে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়। ডবলমুরিং আসন থেকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে সরিয়ে বন্দর-পতেঙ্গা আসনে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। ডবলমুরিং আসনে দেওয়া হয় বিএনপির প্রয়াত নেতা আবদুল্লাহ আল নোমানের ছেলে সাঈদ আল নোমানকে।
বিএনপি প্রার্থী ঘোষণা না করলেও চট্টগ্রাম-১৪ আসনে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ–বিষয়ক সম্পাদক মহসিন জিল্লুর করিম, ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাকালীন কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক সাবেক বিচারপতি আবদুস সালাম মামুন, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি মিজানুল হক চৌধুরী, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি ও চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি নাজিম উদ্দিন চৌধুরী, দক্ষিণ জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি শফিকুল ইসলাম চৌধুরী মনোনয়নপত্র নিয়েছেন। এ ছাড়া মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন বিএনপি কর্মী মোহাম্মদ ইখতিয়ার হোসেন, মোহাম্মদ আল হেলাল, এম এ হাশেম রাজু, এজাজ আহমদ চৌধুরী, জাকির হোসেন ও সিরাজুল ইসলাম। দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার বিষয়ে তাঁরা সবাই আশাবাদী।
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি নাজিম উদ্দিন চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘মনোনয়নপত্র নিয়েছি। বাকিটা দলের নীতিনির্ধারকদের বিষয়।’
একই মন্তব্য করেন কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাকালীন যুগ্ম মহাসচিব সাবেক বিচারপতি আবদুস সালাম মামুন।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, মূলত এলডিপির সঙ্গে জোট গঠনের বিষয়টি আলোচনায় থাকায় এত দিন চট্টগ্রাম-১৪ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়নি। এলডিপির হয়ে দলের সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমদের ছেলে ওমর ফারুক আসনটি থেকে মনোনয়নপত্র নিয়েছেন। তিনি এলডিপির প্রেসিডিয়াম সদস্য। জোট গঠন হলে আসনটি এলডিপির জন্য ছেড়ে দেওয়া হতে পারে—এমন গুঞ্জন ছিল বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে। তবে আসনটি যে বিএনপি এলডিপিকে ছাড়ছে না, তা এখন অনেকটা চূড়ান্ত। এ অবস্থায় এখন দলের প্রার্থী চূড়ান্ত করার দিকেই এগোচ্ছে দল। এতে স্থানীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে আশার সঞ্চার হয়েছে। তাঁদের দাবি, দলের কেউ প্রার্থী হলে এলাকায় সাংগঠনিক ভিত্তি আরও মজবুত হবে।
আগামীকাল মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন। এ অবস্থায় আসনটিতে দলের প্রার্থী কখন ঘোষণা হবে, তা জানতে চাওয়া হয় বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমানের কাছে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘জোটের কারণে দলের নীতিনির্ধারকেরা এত দিন সময় নিয়েছেন। আসনটিতে এখন দল থেকে প্রার্থী ঘোষণা করা হবে। আজ রোববারের মধ্যে প্রার্থী ঘোষণার সম্ভাবনা রয়েছে।’