কুষ্টিয়ায় কলেজছাত্রের হাত-পা বাঁধা লাশ উদ্ধার, ছাদ থেকে ফেলে হত্যার অভিযোগ
কুষ্টিয়া শহরের একটি চারতলা ভবনের ছাদ থেকে ফেলে এক কলেজছাত্রকে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে শহরের কোর্টপাড়া এলাকায় বনফুড বেকারির সামনে এ ঘটনা ঘটে।
ওই কলেজছাত্রের নাম রুবেল হোসেন (২২)। তিনি কুমারখালী উপজেলার শিলাইদহ ইউনিয়নের মির্জাপুর গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে। তিনি কুষ্টিয়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ছাত্র ছিলেন। কুষ্টিয়া শহরের কোর্টপাড়া এলাকার একটি চারতলা ভবনের তৃতীয় তলার মেসে থাকতেন তিনি।
ভবনের নিচ থেকে রশি দিয়ে হাত-পা ও কাপড় দিয়ে মুখ বাঁধা অবস্থায় পড়ে থাকা অবস্থায় রুবেলকে স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে গতকাল দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে মারা যান।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে রুবেলের মেসের বাসিন্দা আনিসুর রহমান বলেন, তিনতলার তিনটি কক্ষে তাঁরা নয়জন থাকেন। রুবেলের কক্ষে তিনজন থাকেন। রাত সাড়ে ১০টার দিকে চিৎকারের শব্দ শুনে নিচে নামেন আনিসুর। সেখানে গিয়ে দেখেন হাত-পা ও মুখ বাঁধা অবস্থায় রুবেল পড়ে আছেন। তখন স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসক তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন। গতকাল সন্ধ্যার পর একসঙ্গে ছাত্রাবাসের মাসিক খরচের হিসাব করেছেন তাঁরা। কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে, সেটা তিনি বুঝতে পারছেন না।
কামরুল হাসান নামের এক প্রত্যক্ষদর্শীর ভাষ্য, ‘ধারণা করছি, হাত-পা ও মুখ বেঁধে মারধর করে ছাদ থেকে ওই ছাত্রকে ফেলে দেওয়া হয়েছে। তাঁর দুই হাত, দুই পা সাদা রশি ও মুখ লাল কাপড় দিয়ে বাঁধা ছিল।’
পুলিশ রুবেলের সঙ্গে একই কক্ষে থাকা হৃদয়, রাইসুলসহ মেসের অন্য বাসিন্দাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত চিকিৎসক মিঠুন চক্রবর্তী বলেন, আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাত ১১টার দিকে ওই তরুণকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। তাঁর মাথায় আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।
আজ বুধবার সকালে কুষ্টিয়া মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) দীপেন্দ্র নাথ সিংহ প্রথম আলোকে বলেন, ময়নাতদন্তের জন্য লাশ কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচজনকে থানায় নেওয়া হয়েছে।
কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আবু রাসেল বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।