চিঠি দেওয়ার পদ্ধতি পছন্দ না হওয়ায় মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তার সঙ্গে দুর্ব্যবহার

সালথা উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে আন্তর্জাতিক নারী দিবসের আলোচনা সভায় উপস্থিত হওয়ার আমন্ত্রণপত্র
ছবি: সংগৃহীত

৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালনের চিঠি দেওয়ার পদ্ধতি পছন্দ না হওয়ায় ফরিদপুরের সালথা উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছেন জামায়াতের এক সমর্থক। এ সময় ওই কর্মকর্তাকে কয়েক দফা ধমকও দিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

আজ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা ফেরদৌস আরার মুঠোফোনে কল করে এ ধরনের কথা বলেন উপজেলা জামায়াতের সমর্থক ওয়ালি উজ জামান।

সালথা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আনিছুর রহমান বলেন, তিনি বিষয়টি শুনেছেন। উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা তাঁকে জানিয়েছেন, চিঠি দেওয়াকে কেন্দ্র করে জামায়াতের এক সমর্থক কিংবা কর্মী তাঁর সঙ্গে  দুর্ব্যবহার করেছেন।

আন্তর্জাতিক নারী দিবসের এই চিঠি উপজেলা জামায়াতের আমির ও সাধারণ সম্পাদককে পাঠানো হয়েছিল। ফেরদৌস আরা প্রথম আলোকে বলেন, ‘নারী দিবস উপলক্ষে আমি রাজনৈতিক সংগঠনের নেতা-কর্মীদের চিঠি পাঠিয়েছি। জামায়াতের নেতাদের চিঠিটি ইউএনও অফিসের অফিস সহকারীর মাধ্যমে পাঠানো হয়। আমার অফিসে লোকবল সংকট রয়েছে। চিঠিটির খাম ছিল না। খাম না দেওয়ায় অফিস সহকারী নিতাইকে তাৎক্ষণিক হেনস্তা করেন ওয়ালি উজ জামান। পরে তিনি ফোন দিয়ে আমাকে ধমকান, কেন খাম ছাড়া চিঠি দিলাম। বিষয়টি আমি ইউএনওকে মৌখিকভাবে জানিয়েছি।’

ওয়ালি উজ জামান ও ফেরদৌস আরার মুঠোফোনের কথোপকথনের কল রেকর্ড এসেছে প্রথম আলোর কাছে। রেকর্ডে জামায়াতের সমর্থককে বলতে শোনা যায়, ‘কোথায় কী জিনিস পাঠাইতে হয়, কেমনে চিঠিপত্র পাঠাতে হয় বুঝতে পারেন না? টাকা, বিল-ভাউচার ভালো করে খাইয়েন, এত দিন যা খাইছেন, এখন বুইজ্যা-শুইন্যা খাইয়েন।’ তখন ফেরদৌস আরা বলেন, ‘আপনি এসব কী বলছেন।’ জবাবে ওয়ালি উজ জামান বলেন, ‘যা বলছি ভালো করেই বলছি। ভদ্রলোকের মতো চিঠি পাঠাবেন।’ ওয়ালি উজ জামানকে আরও বলতে শোনা যায়, ‘আপনি সংশোধন হয়ে যান। আপনার চিঠি নিয়া আসা সম্ভব না হইলে সালথা ছাড়েন।’

যোগাযোগ করা হলে ওয়ালি উজ জামান বলেন, ‘আমি জামায়াতের সমর্থক। জামায়াত নেতাদের চিঠিপত্র আমার দোকানেই পৌঁছে দেওয়া হয়। ওই কল রেকর্ড আমার। খাম ছাড়া চিঠি দেখে আমি মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তাকে শৃঙ্খলা বজায় রাখার পরামর্শ দিয়েছি। কেননা উনি সরকারি কর্মকর্তা হয়েও শৃঙ্খলা পরিপন্থী কাজ করেছেন।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জামায়াতে ইসলামী সালথা উপজেলা শাখার আমির আবুল ফজল মুরাদ বলেন, ‘ওয়ালি উজ জামান আমাদের একজন সমর্থক। আমাদের সব চিঠি তাঁর দোকানে দেওয়া হয়। খামবিহীন চিঠি বিতরণ কোনো নিয়মের মধ্যে পড়ে না। চিঠি দেওয়ার ক্ষেত্রে একটি ন্যূনতম কার্টেসি (সৌজন্য) থাকা উচিত ছিল।’