আ.লীগ নেতার হুমকি, কল পেয়ে টয়লেটে লুকানো প্রধান শিক্ষককে উদ্ধার করল পুলিশ

রাজশাহী জেলার মানচিত্র

রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার একটি বিদ্যালয়ে পরিচালনা কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বে আওয়ামী লীগের এক নেতার হুমকিতে বিদ্যালয়ের টয়লেটে লুকিয়েছিলেন প্রধান শিক্ষক। পরে সেখান থেকে জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯–এ ফোন করলে পুলিশ গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে। পরে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন তিনি।

গতকাল সোমবার সকালে উপজেলার সৈয়দ করম আলী শাহ্ উচ্চবিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। ৯৯৯–এ ফোন করা ওই প্রধান শিক্ষকের নাম মো. কোরবান আলী। যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন, তাঁর নাম আবদুস সামাদ মোল্লা। তিনি রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক।

মো. কোরবান আলী বলেন, করোনার সময় থেকে আহ্বায়ক কমিটি দিয়ে বিদ্যালয়টি চলছে। গতকাল সকালে হঠাৎ করে আওয়ামী লীগ নেতা আবদুস সামাদ মোল্লাসহ স্থানীয় ১০-১৫ জন ব্যক্তি বিদ্যালয়ে আসেন। একটি লিখিত কাগজ তাঁর সামনে দিয়ে এতে সই করার জন্য জোরাজুরি করেন। তিনি সই দিতে না চাইলে আবদুস সামাদ মোল্লা তাঁর কলার ধরে টানাটানি ও অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন। তাঁকে মারার জন্য তাঁরা তেড়ে আসলে, ভয়ে বিদ্যালয়ের টয়লেটে আশ্রয় নেন। সেখান থেকেই তিনি জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯–এ ফোন দিলে পুঠিয়া থানা-পুলিশ এসে তাঁকে উদ্ধার করে। পুলিশকে দেখে ওই আওয়ামী লীগ নেতাসহ অন্যরা চলে যান।

এরপর বিকেলে শিক্ষক কোরবান আলী পুঠিয়া থানায় গিয়ে একটি জিডি করেন। জিডিতে তিনি অভিযোগ করেন, আবদুস সামাদ তাঁকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছেন। তাঁর কথামতো কাজ না করলে বিদ্যালয়ে চাকরি করা কঠিন হবে বলেও শাসিয়েছেন।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগ নেতা আবদুস সামাদ মোল্লা বলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য মনসুর রহমানের কথামতো সৈয়দ করম আলী উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ২০১৭ সাল থেকে অ্যাডহক কমিটি দিয়ে বিদ্যালয় পরিচালনা করছেন। তাঁরা খবর পেয়েছেন তিনি গোপনে আবার সংসদ সদস্যের কথামতো কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া করছেন। এটা জানার পর কয়েকজন অভিভাবক সদস্যকে নিয়ে তিনি গিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘গোপনে কোনো কমিটি করা যাবে না। উন্মুক্ত নির্বাচন দিতে হবে। পুনঃতফসিল ঘোষণা করতে হবে। সে জন্য একজন অভিভাবক আবেদন করেন। আবেদনটি প্রধান শিক্ষককে সই করে নিতে বলা হয়। তাঁকে মারধর করা হয়নি। হুমকিও দেওয়া হয়নি। তিনি গড়িমসি করে উঠে বাথরুমে গিয়ে পুলিশকে ফোন করেছেন।’

রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া–দুর্গাপুর) আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মনসুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ওই নেতার মনের মতো করে কমিটি না করায় তিনি প্রধান শিক্ষককে মেরেছেন।