শরীয়তপুরে সাবেক আইজিপির বিপণিবিতানে ডাকাতি

শরীয়তপুর জেলা শহরের পালং এলাকায় সাবেক আইজিপি শহীদুল হকের বিপণিবিতানের একটি প্রতিষ্ঠানে শনিবার দিবাগত রাতে ডাকাতি হয়েছেছবি: প্রথম আলো

পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) শহীদুল হকের বিপণিবিতানের একটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। শনিবার দিবাগত রাতে শরীয়তপুর জেলা শহরের পালং এলাকার তাঁর ওই বিপণিবিতানে এ ঘটনা ঘটে। ডাকাত দল ওই ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সিন্দুক ভেঙে দেড় কোটি টাকা নিয়ে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

শরীয়তপুর সদরের পালং মডেল থানা সূত্র জানায়, শরীয়তপুর জেলা শহরের পালং উত্তর বাজার এলাকায় শরীয়তপুর-ঢাকা সড়কের পাশে মজিদ-জরিনা ফাউন্ডেশন মার্কেট নামে একটি বিপণিবিতান আছে। তিনতলা বিপণিবিতানটি সাবেক আইজিপি শহীদুল হকের। এখানে একটি চায়নিজ রেস্টুরেন্ট ও পাঁচটি অন্য ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান আছে। এর মধ্যে বহুজাতিক কোম্পানি ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশের স্থানীয় পরিবেশকের একটি কার্যালয় আছে। সেলস প্রমোশন সার্ভিস নামে প্রতিষ্ঠানটি দ্বিতীয় তলায় তাদের কার্যক্রম চালায়। সেখানে একটি কক্ষের সিন্দুকে নগদ টাকা রাখা হয়। বৃহস্পতি ও শনিবার দুই দিনে শরীয়তপুরের বিভিন্ন হাটবাজারে বিক্রি করা সিগারেটের অন্তত দেড় কোটি টাকা ওই সিন্দুকে রাখা ছিল।

পালং মডেল থানা সূত্র আরও জানায়, শনিবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে ভবনটির পেছনের একটি জানালা কেটে সাত-আটজনের ডাকাত দল ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশের স্থানীয় পরিবেশকের কার্যালয়ের একটি কক্ষে ঢোকে। অস্ত্রের মুখে তারা প্রতিষ্ঠানটির তিন কর্মচারীকে জিম্মি করে সিন্দুক ভেঙে নগদ টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়। যাওয়ার সময় সিসিটিভি ক্যামেরার হার্ডডিস্ক খুলে নিয়ে যায়।

ডাকাতির ঘটনার সময় ওই প্রতিষ্ঠানে থাকা কর্মচারী শাকিল খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘জানালা কেটে কক্ষের ভেতর সাত-আটজন প্রবেশ করে অস্ত্রের মুখে আমাদের জিম্মি করে হাত-পা ও মুখ বেঁধে ফেল। মুখ ঢেকে রাখায় তাদের চেনা যায়নি। প্রায় দেড় ঘণ্টা সময় তারা সেখানে অবস্থান করে সিন্দুক ভেঙে টাকা নিয়ে যায়। ডাকাতেরা চলে যাওয়ার পর অনেক চেষ্টার পর আমাদের মধ্যে একজন আমাদের হাতের বাঁধন খুলে মুঠোফোনে ম্যানেজারকে ঘটনা জানাই। এরপরই পুলিশ ভোর পাঁচটার দিকে ঘটনাস্থলে আসে।’

মজিদ-জরিনা ফাউন্ডেশন মার্কেটের ব্যবস্থাপক রেজাউল করিম খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের মার্কেটটি ঢাকা-শরীয়তপুর সড়কের পাশে। মার্কেটের সামনেই আনসার ব্যারাক, ৩০০ মিটার দূরে পালং মডেল থানা। মার্কেটের সিসিটিভি ক্যামেরাগুলো সামনের দিকে। যে প্রতিষ্ঠানে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে, তাদের অনেকগুলো সিসিটিভি ক্যামেরা রয়েছে। কিন্তু ডাকাত দল সিসিটিভি ক্যামেরার হার্ডডিস্ক খুলে নিয়ে গেছে।’

রোববার সকাল থেকে ওই বিপণিবিতানের দ্বিতীয় তলাটি ঘিরে রেখেছে পুলিশ। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের একটি দল আসার পর সিন্দুকটি দেখা হবে। এ ছাড়া ওই ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের অন্য কোনো মালামাল খোয়া গেছে কি না, তা তদন্ত করে দেখবে তারা।

সেলস প্রমোশন সার্ভিসের ব্যবস্থাপক শিহাব আহম্মেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘ব্যাংক বন্ধ থাকায় বৃহস্পতি ও শনিবারের যে টাকা বিক্রি হয়েছে, তা সিন্দুকের ভেতর রাখা হয়েছিল। তার পরিমাণ দেড় কোটি টাকার মতো হবে। ডাকাত দল সিন্দুক ভেঙেছে, কিন্তু কী পরিমাণ টাকা খোয়া গেছে, তা বলতে পারছি না। পুলিশ কক্ষটি ঘিরে রেখেছে। সিআইডি এলে খোয়া যাওয়া টাকার পরিমাণ জানতে পারব।’

পালং মডেল থানা সূত্র জানায়, ডাকাতির ঘটনায় কোটি টাকার ওপরে খোয়া গেছে। সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিট আসার পর সিন্দুক ও ওই কক্ষের অন্যান্য মালামাল পরীক্ষা করা হবে। ঘটনাটি কীভাবে ঘটল ও কারা এর সঙ্গে জড়িত, তা জানতে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।