মাগুরায় পেট্রলবোমা হামলায় পাঁচজন নিহতের মামলার রায় আজ

প্রতীকী ছবি

মাগুরার মঘির ঢালে পেট্রলবোমা হামলায় দগ্ধ হয়ে পাঁচজন নিহতের ঘটনায় করা মামলার রায় হবে আজ মঙ্গলবার। মাগুরার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে  (প্রথম) এ রায় ঘোষণা করা হবে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের (প্রথম) সহকারী কৌঁসুলি (এপিপি) আবুল কালাম আজাদ।

২০১৫ সালের ২১ মার্চ সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোটের টানা অবরোধ কর্মসূচির মধ্যে মাগুরা-যশোর মহাসড়কের মঘির ঢাল এলাকায় একটি ট্রাকে পেট্রলবোমা হামলার ঘটনা ঘটে। এতে ট্রাকচালক ও শ্রমিকসহ নয়জন দগ্ধ হন। তাঁদের মধ্যে পাঁচজন পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

এ ঘটনায় পরদিন ২২ মার্চ মাগুরা সদর থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আবদুস সালাম বাদী হয়ে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করেন। মামলায় বিএনপি ও জামায়াতের ২৬ নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখ করে তাঁদের বিরুদ্ধে পেট্রলবোমা ছুড়ে অগ্নিসংযোগ, হত্যাকাণ্ড ও ত্রাস সৃষ্টির অভিযোগ আনা হয়।

মামলার এজাহারে বলা হয়, ঘটনার দিন শালিখা উপজেলার ভাটোখালী গ্রামে বালু নামিয়ে ট্রাকটি মাগুরা শহরের দিকে ফিরছিল। মঘির ঢাল এলাকায় পৌঁছালে ট্রাকটিতে পেট্রলবোমা নিক্ষেপ করা হয়। এতে থাকা নয়জন আরোহী দগ্ধ হন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় পাঁচজনের মৃত্যু হয়। তাঁরা হলেন ট্রাকচালক ইমরান মোল্লা, মতিন বিশ্বাস, শাকিল, ইয়াদুল ও রওশন আলী। দগ্ধ হলেও প্রাণে বেঁচে যান ফারুক, আরব আলী, নাজমুল হোসেন ও ইলিয়াস বিশ্বাস। তদন্ত শেষে ওই বছরের আগস্টে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক মো. ইমাউল হক ২৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন।

মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিদের মধ্যে আছেন মাগুরা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আলী আহমেদ, সদস্যসচিব মনোয়ার হোসেন খান, স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান, ছাত্রদলের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহিম, যুবদল ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সদস্যসচিব রবিউল ইসলাম, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এস এম আবু তাহের, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ আহম্মেদ, জেলা বিএনপির সদস্য মাসুদ হাসান খান, জেলা জামায়াতের সাবেক আমির আলমগীর হোসেন, বর্তমান আমির এমবি বাকের, সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও জামায়াত নেতা আমির ফারুক হোসেন এবং জেলা বিএনপির সদস্য ও আইনজীবী মিজানুর রহমান।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ৩১ জুলাই এ মামলায় অভিযোগ গঠন করা হয়। বিচার চলাকালে ৬২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন আদালত। এ ছাড়া তিনজন আসামি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তবে তাঁরা ওই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেন।

আসামিপক্ষের আইনজীবী কুমুদ রঞ্জন বিশ্বাস প্রথম আলোকে বলেন, এ মামলায় কোনো প্রত্যক্ষ সাক্ষী নেই। যাঁরা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন, তাঁরা নিজেদের জড়িয়ে কিছু বলেননি। আমাদের মক্কেলদের অন্যায়ভাবে এ মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। রাজনৈতিকভাবে বিএনপি ও জামায়াতকে ধ্বংস করার জন্যই ঘটনাটি ঘটানো হয়েছিল।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আবুল কালাম আজাদ এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।