ঠাকুরগাঁওয়ে দুই সাংবাদিক ও ৩৫ আ.লীগ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা

মামলাপ্রতীকী ছবি

ঠাকুরগাঁওয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচিতে হামলা এবং হত্যার উদ্দেশ্যে মারপিট, অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগে দুই সাংবাদিক ও ৩৫ আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীর নামে মামলা করা হয়েছে।

আজ বুধবার দুপুরে ঠাকুরগাঁওয়ের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ মামলা করেন সদর উপজেলার সিঙ্গিয়া দৌলতপুর গ্রামের শিক্ষার্থী মো. মামুন ইসলাম (১৯)। এ মামলায় অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে আরও ১০০ থেকে ১৫০ জনকে।

মামলায় বেসরকারি যমুনা টেলিভিশনের প্রতিনিধি পার্থ সারথি দাশ ও দেশ টেলিভিশনের প্রতিনিধি শাকিল আহমেদ, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অরুনাংশু দত্ত, পৌর যুবলীগের সভাপতি আমির হোসেন, জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সমীর দত্ত, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য রয়েল বড়ুয়া, পৌরসভার প্যানেল মেয়র কাইয়ুম চৌধুরীসহ আওয়ামী লীগের ৩৫ নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়েছে।

মামলার এজাহারে বলা হয়, গত ৪ আগস্ট ঠাকুরগাঁও শহরের চৌরাস্তায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি চলছিল। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আসামিরা লাঠিসোঁটা, লোহার রড, ককটেল, হাতবোমা নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছাত্রদের ওপর হামরা চালান। ছাত্রদের প্রতিহত করতে ককটেল ও হাতবোমা ছোড়েন। বেলা আড়াইটার দিকে মামুন ইসলাম শহরের আর্টগ্যালারি মোড়ে পৌঁছালে আসামিরা তাঁকে ঘিরে ফেলে ককটেল ও হাতবোমা ফাটান। পরে আসামিরা রামদা, চাইনিজ কুড়াল ও পিস্তল দিয়ে মামুনকে ভয়ভীতি দেখান। আসামি মো. সিদ্দিক তাঁর প্যান্টের পকেট থেকে ৭ হাজার ৫০০ টাকা ছিনিয়ে নেন। তাজউদ্দিন নামে আরেক আসামি রামদা দিয়ে মামুনের মাথায় কোপ দেন। আসামি ফরহাদ চাইনিজ কুড়াল দিয়ে মামুনের পায়ে আঘাত করেন। ইকবাল লোহার রড দিয়ে বুকের পাঁজরে আঘাত করলে পাজরের হাড় ভেঙে যায়। পরে মামুনকে আসামিরা সমীর দত্তের চেম্বারে নিয়ে গিয়ে মামুনের বাবার কাছে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। মামুনের বাবা ৩০ হাজার টাকা নিয়ে এলে আসামিরা তাঁর কাছ থেকে মামলা না করার শর্তে ফাঁকা নন–জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে সই নেন। পরে তাঁরা মামুনকে ছেড়ে দেন।

এই মামলায় যমুনা টেলিভিশনের প্রতিনিধি পার্থ সারথি দাশকে ৩০ নম্বর আসামি ও দেশ টেলিভিশনের প্রতিনিধি শাকিল আহমেদকে ৩৪ নম্বর আসামি করা হয়েছে।

মামলা প্রসঙ্গে পার্থ সারথি দাশ বলেন, ‘আমি সাংবাদিকতা করি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আমরা সব সময় ছাত্রদের পাশে থেকে সমর্থন দিয়ে এসেছি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচিতে হামলা ও আন্দোলনের এক ছাত্রকে মারধর করার পর অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের মতো মামলায় নিজের নাম দেখে আমি বিস্মিত হয়েছি।’

শাকিল আহমেদ বলেন, ‘মামুন ইসলাম নামের ওই শিক্ষার্থী কেন আমার বিরুদ্ধে এমন একটি মামলা করলেন, তা বুঝে উঠতে পারছি না। মামলার এজাহারে তাঁর মুঠোফোন নম্বরও নেই যে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করব।’

এ বিষয়ে জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি জয়নাল আবেদিন বলেন, মামলাটি তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য ঠাকুরগাঁও সদর থানার ওসিকে নির্দেশ প্রদান করেছেন।