সুপারিগাছ বেয়ে দোতলায় উঠে পোলিং এজেন্টকে গুলি

আহত আরমানুল ইসলামছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম-১৫ আসনে এক প্রার্থীর পোলিং এজেন্টের দায়িত্ব পালন করা যুবক গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। ভোট গ্রহণের পর গতকাল রোববার রাত পৌনে ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

গুলিবিদ্ধ যুবকের নাম আরমানুল ইসলাম (২৯)। তিনি সাতকানিয়া সদর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা।

আরমানুলের চোখে ও মুখে ছররা গুলি লাগে। তাঁকে প্রথমে সাতকানিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় সেখান থেকে তাঁকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে পাঠানো হলেও পরে ঢাকার জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গেছে, আরমানুলের সাতকানিয়া সদরে একটি কাপড়ের দোকান রয়েছে। তিনি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে উপজেলার হোসেননগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মিনার প্রতীকের প্রার্থীর পোলিং এজেন্ট ছিলেন।

আহত আরমানুল ইসলামের ভাই ইয়াছিন আরফাত প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর ভাই নির্বাচনে কোনো ধরনের উসকানিমূলক কর্মকাণ্ডে ছিলেন না। এরপরও তাঁকে ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল মোতালেবের সমর্থকেরা ভোটের দিন সকাল ১১টায় কেন্দ্র থেকে বের করে দেন। রাতে ঈগল প্রতীকের প্রায় অর্ধশত কর্মী তাঁর বাড়িতে গিয়ে বড় ভাই আরমানুল ইসলামকে গুলি করে।

আরমানুলের আরেক ভাই মোহাম্মদ হাছান বলেন, ‘রাত ১১টা ৫০ মিনিটের দিকে ঈগলের অনুসারীরা এসে আমার বাড়ি লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে থাকে। একপর্যায়ে আমি বের হয়ে তাদের গালাগাল করে ঘরের দরজা বন্ধ করে ভেতরে ঢুকে যাই। তখন হামলাকারীদের একজন সুপারিগাছ বেয়ে আমাদের দোতলা বাড়ির ব্যালকনি পর্যন্ত ওঠে। এরপর ব্যালকনি দিয়ে ঘরের ভেতরে থাকা আরমানুলকে গুলি করে।’

সাতকানিয়া থানার উপপরিদর্শক মোস্তাক আহমেদ আজ রাত ৯টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। তবে এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে থানায় কেউ অভিযোগ করেননি। এরপরও পুলিশ বিষয়টির তদন্ত করছে।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ঈগল প্রতীকের প্রার্থীর প্রধান নির্বাচনী সমন্বয়ক আ ম ম মিনহাজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা ঘোষণা দিয়েছি, যদি কেউ অতি উৎসাহী হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর লোকজনের ওপর হামলা করে, এর দায়ভার আমরা নেব না। এ ধরনের ঘটনা ঘটলে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অনুরোধ করছি। সম্ভবত অন্য কোনো ঘটনায় পূর্ববিরোধের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে।’

চট্টগ্রাম-১৫ আসনে (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) বেসরকারিভাবে স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল মোতালেব জয়ী হয়েছেন। তিনি সাতকানিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী।

সাতকানিয়া উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন ও এক পৌরসভা এবং লোহাগাড়া উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন মিলে গঠিত চট্টগ্রাম-১৫ আসন। আবদুল মোতালেব প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য হয়েছেন। ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে জয়ী হন আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী।