সময়ের মুখ

সামাজিক কাজ করতে পারলে ভালো লাগে

ছোট থেকেই সামাজিক নানা কাজ করে চলেছেন ঝিনাইদহ সদর উপজেলার রামনগর গ্রামের জহির রায়হান। দেয়ালে মনীষীদের বাণী লেখা, রাস্তার ধারে গাছ লাগানো, মাঠে কৃষকদের জন্য বিশ্রামাগার তৈরি করা, সেখানে সুপেয় পানির জন্য টিউবওয়েল স্থাপন, পাখির আবাসের জন্য গাছে গাছে খাঁচা তৈরি, অসহায় ছেলেমেয়েদের পড়ালেখার খরচ দেওয়াসহ বেশ কাজ রয়েছে এই জহিরের। এবার প্রচণ্ড দাবদাহে তিনি লেগে পড়েছেন পাখির তৃষ্ণা মেটানোর কাজে। গাছে গাছে বেঁধে দিচ্ছেন পাতিল, যা সংবাদমাধ্যমে উঠে এসেছে। অনেকেই তাঁকে ধন্যবাদ দিচ্ছেন, প্রশংসা করছেন। জহির রায়হানের সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন প্রথম আলোর ঝিনাইদহের নিজস্ব প্রতিবেদক আজাদ রহমান

প্রথম আলো:

আপনি কবে থেকে গাছে গাছে পাতিল বাঁধা শুরু করেছেন?

জহির রায়হান: ২১ এপ্রিল থেকে আমি এ কাজ করে যাচ্ছি, যা এখনো চলমান। পার্শ্ববর্তী এলাকার খাল-বিলে পানি না জমা পর্যন্ত কাজটি করে যাব।

প্রথম আলো:

আপনার মাথায় বিষয়টি কীভাবে এল?

জহির রায়হান: এবারের প্রচণ্ড খরায় মাঠঘাটে কোথাও পানি নেই। এমন অবস্থায় রাতে শুয়ে শুয়ে ভাবি, পানির পিপাসা পেলে আমরা হাতের কাছে পেয়ে যাচ্ছি। নলকূপগুলোতে পানির সংকট হলেও বিকল্প ব্যবস্থায় পানি পান করছি; কিন্তু পাখিরা পানির পিপাসায় কী করছে, তাদের পানির ব্যবস্থা কীভাবে হবে? এই চিন্তা থেকে আমি গাছে গাছে পাতিল বেঁধে পানির ব্যবস্থা করি।

প্রথম আলো:

প্রতিদিন এগুলোতে কীভাবে পানি দিচ্ছেন?

জহির রায়হান: আমি যেসব পাতিল বেঁধে দিয়েছি, তার সুতা গাছের নিচে রয়েছে। আমি নিজে ঘুরে ঘুরে পানি দিচ্ছি, আর এলাকার কিছু মানুষকে অনুরোধ করে এসেছি—পাতিল নামিয়ে পানির ব্যবস্থা করে দিতে।

প্রথম আলো:

আপনি দরিদ্র মানুষ, এসব কাজে যে অর্থ ব্যয় হয়, সেগুলো মেটান কীভাবে?

জহির রায়হান: আমার একটি পেশা আছে। সেটি হলো মানুষের বাসাবাড়িতে রঙের কাজ করা। এই কাজ করে আমি যা আয় করি, তার তিন ভাগের এক ভাগ সামাজিক কাজে ব্যয় করি।

প্রথম আলো:

এই কাজে আপনার ভালো লাগা কী?

উত্তর: সামাজিক কাজ করতে পারলে এমনিতেই নিজের মধ্যে ভালো লাগা কাজ করে। পাশাপাশি যখন কেউ বলে, এ কাজটা জহিরের কাছ থেকে শিখেছি, জহির যা করে তা অনেকেই পারে না, এসব শুনলে খুব ভালো লাগে।