ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তায় বাঁশের তৈরি পণ্যের কারিগরেরা

আর্থিক টানাপোড়েনে দিলীপ চন্দ্রের (৪১) পড়াশোনা করা হয়নি। তাই ১৫ বছর বয়সে বেছে নেন পৈতৃক পেশা। বাঁশ দিয়ে ডালা, কুলা, চালুন, ধান রাখার ডুলিসহ বিভিন্ন তৈজসপত্র তৈরির কাজ শুরু করেন। স্থানীয় বাজারে এসব পণ্য বিক্রি করে দিলীপ চন্দ্রের সংসার চলছে।

দিলীপ চন্দ্রের বাড়ি গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ পৌরসভার মীরগঞ্জ পাটনিপাড়া এলাকায়। এখানকার প্রায় ১৫০ নারী-পুরুষ বাঁশের তৈরি জিনিসপত্র বানিয়ে সংসার চালান। আশপাশের হাটবাজার থেকে সংগ্রহ করা বাঁশ দিয়েই এসব জিনিস তৈরি করা হয়।

সুন্দরগঞ্জসহ গাইবান্ধার অন্য উপজেলাগুলোতেও মীরগঞ্জ পাটনিপাড়া এলাকার বাঁশের তৈজসপত্রের সুনাম রয়েছে। তবে বাঁশের দাম বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি প্লাস্টিক পণ্য সহজলভ্য হওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা।

গ্রামটি ঘুরে দেখা যায়, গ্রামের বেশির ভাগ বাড়িতে বাঁশের কাজ চলছে। বাড়ির বারান্দা থেকে উঠান—কোনো জায়গা ফাঁকা নেই। পরিবারের সবাই মিলে এ কাজ করেন। এর মধ্যে কেউ বাঁশ কাটছেন, কেউ বাঁশ চেঁচেছুলে পাতলা করছেন। কেউ আবার বাঁশ বুনে ডালা-কুলা বানাচ্ছেন।

মীরগঞ্জ পাটনিপাড়া এলাকার কারিগরদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মীরগঞ্জসহ আশপাশের বিভিন্ন বাজার থেকে তাঁরা বাঁশ সংগ্রহ করেন। এক বছর আগেও এসব বাজারে একটি বাঁশের দাম ছিল ১২০ থেকে ১৫০ টাকা। তবে বর্তমান বাজারে প্রতিটি বাঁশ ২০০ থেকে ২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এতে আগের চেয়ে তাঁদের উৎপাদন খরচ বেড়ে গেছে।

বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের (বিসিক) গাইবান্ধা শাখার সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) রবীন্দ্রনাথ রায় প্রথম আলোকে বলেন, সুন্দরগঞ্জের মীরগঞ্জ পাটনিপাড়ার বাঁশশিল্পের স্থানীয়ভাবে সুনাম আছে। এ শিল্পের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা চাইলে তাঁদের ঋণ দেওয়া হবে।