এলাকাবাসীর প্রতিবাদের মুখে পাখিগুলো ছেড়ে মুচলেকা দিলেন শিকারিরা

শিকার করা পাখিসহ দুই শিকারী। গতকাল মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার ধামাই চা-বাগান এলাকায়
ছবি: প্রথম আলো

জমিতে জাল দিয়ে ফাঁদ তৈরি করে তিনটি কানিবক শিকার করেন দুই ব্যক্তি। জালবন্দী পাখি নিয়ে তাঁরা বাড়িতে ফিরছিলেন। এ সময় স্থানীয় এক মুদিদোকানি এলাকাবাসীকে নিয়ে তাঁদের পথ রোধ করেন। প্রতিবাদের মুখে মুচলেকা দিয়ে শিকারিরা পাখিগুলো ছেড়ে দিতে বাধ্য হন।

গতকাল শুক্রবার বিকেলে মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার ধামাই চা-বাগানের গৌরাঙ বস্তি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আবদুল হক (৫৫) ও সুনীল (৬০) নামের ওই দুই শিকারীর বাড়ি পাশের বড়লেখা উপজেলার দক্ষিণভাগ (দক্ষিণ) ইউনিয়নের কলাজুরা এলাকায়।

সরেজমিনে গৌরাঙ বস্তি এলাকায় দেখা যায়, দুই ব্যক্তিকে ঘিরে মানুষের জটলা। তাঁদের মধ্যে একজনের হাতে পাখি শিকারের কাজে ব্যবহৃত জালসহ বিভিন্ন ধরনের সরঞ্জাম। আর আরেকজনের হাতে জালবন্দী তিনটি মাঝারি আকারের কানিবক। উত্তেজিত কিছু লোক তাঁদের পুলিশের কাছে ধরিয়ে দেওয়ার কথা বলাবলি করতে থাকেন। একপর্যায়ে ওই দুই ব্যক্তি অপরাধ স্বীকার করে ভবিষ্যতে আর এ ধরনের কাজ না করার অঙ্গীকার করেন। পরে এলাকাবাসীর উপস্থিতিতে নিজেরাই পাখিগুলোকে পাশের জমিতে নিয়ে ছেড়ে দেন।

গৌরাঙ বস্তিতে পাকা সড়কের পাশে স্থানীয় বাসিন্দা বিশু চাষার (৩০) ছোট মুদিদোকান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, দুই ব্যক্তি দুপুর থেকে গৌরাঙ হাওরে জাল পেতে পাখি ধরছিলেন। আগেই বাধা দিতে পারতেন। টের পেয়ে পালিয়ে যেতে পারতেন। এ কারণে ফেরার সময় তাঁদের হাতেনাতে আটকান।

আবদুল হক ও সুনীল বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এ কাজ করে আসছিলেন। প্রায়ই আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় পাখি শিকার করতেন। এলাকার কিছু লোক তাঁদের কাছ থেকে এসব পাখি কিনতেন। ভালো দামও মিলত। তাঁরা বলেন, এ ঘটনার পর আর কখনো এ কাজ করবেন না। অন্য কাজ বেছে নেবেন।

স্থানীয় বাসিন্দা হোছন আলী উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বীরেশ রুদ্রপাল বলেন, দোকানদার বিশু চাষার প্রচেষ্টায় পাখিগুলো রক্ষা পেয়েছে। পাখিসহ এলাকার পরিবেশ রক্ষায় তাঁর মতো সবারই সচেতন হওয়া দরকার। শিকারিরা নিজেদের অপরাধের জন্য অনুতপ্ত হয়েছেন। ভবিষ্যতে তাঁরা অঙ্গীকার মেনে চলবেন বলে আশা করেন তিনি।