হাতিয়ায় শিক্ষা কর্মকর্তাকে মারধরে অভিযুক্ত ডেটা এন্ট্রি অপারেটর বরখাস্ত
নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কামরুল হাসানের ওপর হামলার ঘটনায় অভিযুক্ত উপজেলা রিসোর্স সেন্টারের ডেটা এন্ট্রি অপারেটর মোহাম্মদ ছাকায়াত হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
আজ বুধবার প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ে ওই বরখাস্তের চিঠি এসে পৌঁছেছে। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফেরদৌসী বেগম দুপুরে প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
১৬ অক্টোবর রাতে উপজেলার সদর ওছখালীতে হামলার শিকার হন সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কামরুল হাসান (৩৯)। এ ঘটনায় ডেটা এন্ট্রি অপারেটর ছাকায়াতের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা সাত থেকে আটজনকে আসামি করে হাতিয়া থানায় মামলা করা হয়। তবে অভিযুক্ত ছাকায়াতকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আমির হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, অভিযুক্ত ছাকায়াতকে গ্রেপ্তারে একাধিক অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। পরে তিনি উচ্চ আদালত থেকে ছয় সপ্তাহের জামিন নিয়েছেন মর্মে গতকাল মঙ্গলবার তাঁর একজন আইনজীবীর প্রত্যয়নপত্র পাওয়া গেছে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজোয়ান হায়াত স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে গত বৃহস্পতিবার ছাকায়াতকে বরখাস্ত করা হয়। চিঠিতে বলা হয়, ‘সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ২০১৮ অনুযায়ী হাতিয়া উপজেলা রিসোর্স সেন্টারের ডেটা এন্ট্রি অপারেটর মোহাম্মদ ছাকায়াত হোসেনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় কার্যধারা গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেওয়ায় তাঁকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।’
হামলার শিকার শিক্ষা কর্মকর্তা কামরুল হাসান বলেন, ১৬ অক্টোবর রাতে মোটরসাইকেলে করে বাসায় ফিরছিলেন তিনি। হাতিয়ার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার-সংলগ্ন সড়ক অতিক্রমকালে ছাকায়াতের নেতৃত্বে সাত থেকে আটজন তাঁর পথ রোধ করেন এবং কিছু বুঝে ওঠার আগেই তাঁকে এলোপাতাড়ি কিলঘুষি ও লাথি মারতে থাকেন। তাঁর চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যান। স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
কামরুল হাসানের অভিযোগ, ডেটা এন্ট্রি অপারেটর ছাকায়াত গণিত অলিম্পিয়াড প্রশিক্ষণে অংশ নেওয়া শিক্ষকদের সম্মানী থেকে জনপ্রতি ৫০০ টাকা করে চাঁদা দাবি করেন। এতে রাজি না হওয়ায় ১৬ অক্টোবর দুপুরে মফিজ উদ্দিন নামের এক শিক্ষককে মারধর করেন তিনি। কামরুল ওই ঘটনার প্রতিবাদ করায় ছাকায়াতের নেতৃত্বে তাঁর ওপর হামলা করা হয়।
ঘটনার পর অভিযুক্ত ছাকায়াত হোসেন গা ঢাকা দিয়েছেন। অভিযোগ ও বরখাস্তের বিষয়ে জানতে তাঁর মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।