১৬৩ কাউন্সিলর প্রার্থীর ১৯ জন স্বাক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন 

জাতীয় পার্টি থেকে মেয়র প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে সাইফুল ইসলামকে, যিনি তাঁর হলফনামায় শিক্ষাগত যোগ্যতা  উল্লেখ করেছেন ‘স্বাক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন’।

রাজশাহী জেলা

শিক্ষানগরীখ্যাত রাজশাহী নগরের শিক্ষার হার ৭১ দশমিক ২২ শতাংশ। আসন্ন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে এমন একটি নগরের মেয়র প্রার্থীদের একজনের শিক্ষাগত যোগ্যতার ঘরে লেখা রয়েছে স্বাক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন। এ ছাড়া ১২ জন সাধারণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী ও ৭ জন সংরক্ষিত নারী আসনের কাউন্সিলর প্রার্থী হলফনামায় শিক্ষাগত যোগ্যতার ঘরে ‘অক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন’, ‘স্বশিক্ষিত’ ও ‘স্বাক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন’ লিখেছেন।

এবারের নির্বাচনে জাতীয় পার্টি থেকে মেয়র প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে সাইফুল ইসলামকে, যিনি তাঁর হলফনামায় নিজের শিক্ষাগত যোগ্যতার জায়গায় উল্লেখ করেছেন ‘স্বাক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন’। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে প্রার্থী সাইফুল ইসলাম বলেন, তিনি রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছিলেন। কিন্তু পরে আর সনদ খুঁজে পাননি। এ জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতার জায়গায় স্বাক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন লিখেছেন। তিনি বলেন, মানুষ মূর্খ মনে করলে করুক। সেটাই নিরাপদ।

রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে এবার মেয়র প্রার্থী চারজন। অন্য তিন মেয়র প্রার্থী উচ্চশিক্ষিত। এ ছাড়া সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ১১৭ জন এবং সংরক্ষিত নারী আসনে ৪৬ জনের মনোনয়নপত্র বহাল রয়েছে। সাধারণ ওয়ার্ডের ২২ জন এবং সংরক্ষিত নারী আসনের ১১ জনের শিক্ষাগত যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত। এসএসসি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন সাধারণ ওয়ার্ডের ২২ জন ও সংরক্ষিত আসনের ৬ জন প্রার্থী।

উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত পড়াশোনা সাধারণ ওয়ার্ডের ২১ ও সংরক্ষিত আসনের ৭ জন প্রার্থীর। এ ছাড়া সংরক্ষিত নারী আসনের একজন পঞ্চম শ্রেণি, সাধারণ ওয়ার্ডের একজন চতুর্থ শ্রেণি এবং দুজন দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করার তথ্য হলফনামায় দিয়েছেন। সাধারণ ওয়ার্ডের অন্য ৩৭ এবং সংরক্ষিত নারী আসনের অন্য ১৪ জন প্রার্থী স্নাতক, স্নাতকোত্তর বা সমমান পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন।

হলফনামায় যেসব কাউন্সিলর প্রার্থী ‘অক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন’, ‘স্বশিক্ষিত’ অথবা ‘স্বাক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন’ লিখেছেন তাঁরা হলেন ১১ নম্বরের প্রার্থী ও সাবেক কাউন্সিলর আবু বাক্কার, ১৭ নম্বরের প্রার্থী ও বর্তমান কাউন্সিলর শাহাদত আলী, ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী ও বর্তমান কাউন্সিলর মাহাতাব হোসেন চৌধুরী, ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী ও বর্তমান কাউন্সিলর আরমান আলী, ২৬ নম্বরের প্রার্থী রবিউল ইসলাম ও মখলেসুর রহমান, ২৭ নম্বরের প্রার্থী নুরুল হুদা সরকার, ১৮ নম্বরের মো. ভুট্টু ও মোখলেসুর রহমান, ৩ নম্বরের রফিকুল ইসলাম ও মো. শামিম, ৫ নম্বরের মাহাতাবুল ইসলাম এবং ৮ নম্বরের হারুন-অর-রশিদ।

সংরক্ষিত নারী আসনে অক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন, স্বশিক্ষিত বা স্বাক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন প্রার্থীরা হলেন সংরক্ষিত আসন ৩–এর প্রার্থী ও এ আসনের বর্তমান কাউন্সিলর মুসলিমা বেগম, সংরক্ষিত আসন ১–এর প্রার্থী রেখা, ৮–এর পারভীন বেগম ও শিখা রায়, আসন ৬–এর মনজুরা বেগম, ২২, ২৩ ও ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী রেহেনা বেগম এবং ১, ২ ও ৪ নম্বর ওয়ার্ডের রওশন আরা ইসলাম।

২৩ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী ও বর্তমান কাউন্সিলর মাহাতাব হোসেন চৌধুরী তাঁর হলফনামায় লিখেছেন অক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন। এ ব্যাপারে তাঁর ভাষ্য হচ্ছে, তিনি এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছিলেন, কিন্তু পরীক্ষার সনদপত্র তোলা হয়নি। এ জন্য তিনি শিক্ষাগত যোগ্যতার জায়গায় অক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন লিখেছেন। তিনি বলেন, গত নির্বাচনের চেয়ে এবার তাঁর ভোটের মাঠ আরও ভালো। অক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন প্রার্থী হওয়ার কারণে তাঁর নির্বাচনে কোনোই প্রভাব পড়েনি।