গজারিয়ায় গ্যাস-সংযোগ সচলের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ, ফাঁকা গুলি

মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় কেটে দেওয়া গ্যাস-সংযোগ সচল করার দাবিতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে এলাকাবাসীর বিক্ষোভ। মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার বাউশিয়া ইউনিয়নের দড়ি বাউশিয়া এলাকায়ছবি: প্রথম আলো

মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলায় তিতাসের বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া গ্যাসের সংযোগ সচল করার দাবিতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন এলাকাবাসী। আজ মঙ্গলবার দুপুর থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত উপজেলার বাউশিয়া ইউনিয়নের দড়ি বাউশিয়া এলাকায় মহাসড়ক অবরোধ করা হয়।

এ সময় পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ও ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এতে পুলিশসহ অন্তত ১২ জনের আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এর আগে ২৫ ফেব্রুয়ারি অবৈধ সংযোগ বন্ধ করতে উপজেলার বাউশিয়া, ভবেরচর, বালুয়াকান্দি ইউনিয়নের সব কটি গ্রামের গ্যাস-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয় তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ।

স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গ্যাস না থাকায় ৯ দিন ধরে শতাধিক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানসহ কয়েক হাজার আবাসিক গ্রাহক চরম ভোগান্তিতে পড়েন। আবার গ্যাস-সংযোগ সচল করার দাবিতে আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তিন ইউনিয়নের কয়েক হাজার নারী-পুরুষ মহাসড়কের পাশে দড়ি বাউশিয়া এলাকায় জড়ো হন। দুপুর পর্যন্ত মহাসড়ক এলাকায় অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন। বেলা একটা পর্যন্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলেও বেলা বাড়ার পর বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠানের শ্রমিকেরা বিক্ষোভে যোগ দেন। এতে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে দেন। এতে সড়কে যানজট দেখা দেয়।

মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দেওয়া নিয়ে পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে ইট–পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। পুলিশ ফাঁকা গুলি ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে
ছবি: প্রথম আলো

কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, বিক্ষোভের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন গজারিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কোহিনূর আক্তার, মুন্সিগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর-গজারিয়া সার্কেল) থান্দার খায়রুল হাসান, গজারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজীব খানসহ পুলিশ সদস্যরা। তাঁরা বিক্ষোভকারীদের মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে শুরু করেন। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাঁদানে গ্যাসের শেল ও ফাঁকা গুলি ছোড়ে। এতে পুলিশসহ ১০ থেকে ১২ জন আহত হন। প্রায় দুই ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে মহাসড়ক থেকে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

নাম প্রকাশ না করে অন্তত দুজন বিক্ষোভকারী প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা শত শত বৈধ গ্রাহক। কয়েক বছর আগে তিতাস কর্তৃপক্ষের কিছু অসাধু কর্মকর্তা ও স্থানীয় কয়েকজন মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে বহু মানুষকে বৈধ বলে নতুন গ্যাস-সংযোগ দেন। কয়েক দিন আগে সেসব সংযোগ অবৈধ বলে চিহ্নিত করে তিতাস। সেসব সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে গিয়ে বৈধ সংযোগও বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে। তাঁরা সংযোগ ফিরে পেতে চান। আবার সংযোগ দেওয়া না হলেও তাঁরা আবার মহাসড়ক অবরোধ করবেন।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার থান্দার খায়রুল হাসান সন্ধ্যা ছয়টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, কয়েক দফা বিক্ষোভকারীরা মহাসড়ক অবরোধ করেন। তাঁরা পুলিশের ওপর ইটপাটকেল ছুড়েছেন। এতে তিনিসহ পুলিশের ছয়জন সদস্য আহত হয়েছেন। বিকেল পাঁচটার দিকে বিক্ষোভকারীদের সরানো সম্ভব হলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।