নিখোঁজের তিন দিন পর কংস নদ থেকে গৃহবধূর লাশ উদ্ধার

আঁখি মনি

নিখোঁজের তিন দিন পর সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার কংস নদ থেকে আঁখি মনি (২০) নামের এক গৃহবধূর ভাসমান লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ বুধবার বেলা একটার দিকে উপজেলার ঘুলুয়া গ্রামসংলগ্ন নদ থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়।

লাশ উদ্ধার হওয়া আঁখি মনি উপজেলার সুখাইড় রাজাপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের ঘুলুয়া গ্রামের বিল্লাল হোসেনের (২৭) স্ত্রী এবং নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলার চন্দ্রপুর গ্রামের আয়নাল হকের মেয়ে। গত রোববার সকাল থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুপুরে ওই গৃহবধূর স্বামীকে আটক করেছে পুলিশ।

পুলিশ ও স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০২২ সালের ডিসেম্বরে আঁখি মনির সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে বিল্লাল হোসেনের বিয়ে হয়। রোববার সকালে বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন ওই গৃহবধূ। বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করে তাঁকে না পেয়ে পরদিন সোমবার থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তাঁর স্বামী। আজ সকাল সাড়ে নয়টার দিকে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের এক সদস্যের মাধ্যমে পুলিশ খবর পায়, ঘুলুয়া গ্রামসংলগ্ন কংস নদে এক নারীর লাশ ভাসছে। খবর পেয়ে বেলা ১১টার দিকে ঘটনাস্থলে যায় ধর্মপাশা থানা–পুলিশ। পরে গৃহবধূর স্বজনদের উপস্থিতিতে বেলা একটার দিকে নদ থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়।

গৃহবধূর স্বামী বিল্লাল হোসেন বলেন, ‘স্ত্রীর সঙ্গে আমার সম্পর্ক খুবই ভালো ছিল। কেন সে এমন করল, কোনো কারণ খুঁজে পাচ্ছি না।’

তবে ওই গৃহবধূর বাবা আয়নাল হকের অভিযোগ, ‘মেয়ের জামাই মাঝেমধ্যে আমার কাছ থেকে টাকা নিয়ে দিতে মেয়েকে চাপ দিত। শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে মেয়েকে হত্যা করে নদীতে ফেলে দিয়েছে মেয়ের জামাই ও তার পরিবার। আমি থানায় মামলা করব।’

অভিযোগের বিষয়ে গৃহবধূর ভাশুর খায়রুল মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ছোট ভাইয়ের (বিল্লাল) স্ত্রী খুবই শান্ত স্বভাবের ছিলেন। ছোট ভাইকে কখনো শ্বশুরবাড়ি থেকে টাকা আনার কথা বলতে শোনেননি। শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের কোনো ঘটনাই ঘটেনি। তাঁদের বিরুদ্ধে অযথা অপবাদ দেওয়া হচ্ছে।

ধর্মপাশা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শামসুদ্দোহা মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, গৃহবধূর লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ সুনামগঞ্জ জেলা আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো প্রস্তুতি চলছে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গৃহবধূর স্বামী বিল্লালকে পুলিশের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।