ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই দুই ছাত্রলীগ নেত্রী তদন্ত কমিটির ডাকে ক্যাম্পাসে
কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে প্রথম বর্ষের এক ছাত্রীকে নির্যাতনে অভিযুক্ত দুই ছাত্রলীগ নেত্রী সানজিদা চৌধুরী ও তাবাসসুম ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের করা তদন্ত কমিটির ডাকে ক্যাম্পাসে এসেছেন।
আজ সোমবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন তাঁরা। এরপর তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক আইন বিভাগের সভাপতি রেবা মণ্ডলের কার্যালয়ে প্রবেশ করেন তাঁরা। সেখানে কমিটির অন্য সদস্যরাও আছেন।
১২ ফেব্রুয়ারি রাতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের গণরুমে তাঁকে সাড়ে চার ঘণ্টা আটকে রেখে নির্যাতন করার অভিযোগ করেন ফিন্যান্স বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রী ফুলপরী খাতুন। ভুক্তভোগী ছাত্রীর ভাষ্য, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সানজিদা চৌধুরীর নেতৃত্বে তাঁর অনুসারীরা তাঁর ওপর নির্যাতন চালিয়েছেন। নির্যাতনের সময় তাঁকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ, গালাগাল এবং এ ঘটনা কাউকে জানালে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়। ওই ছাত্রী গত বুধবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, হলের প্রাধ্যক্ষ ও ছাত্র উপদেষ্টার কাছে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দেন।
নির্যাতনের ঘটনায় এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত বৃহস্পতিবার বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক-আল-জলিলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ আদেশ দেন। শিক্ষার্থী নির্যাতনের ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠনের পাশাপাশি তদন্ত চলাকালে সানজিদা ও তাবাসসুম যাতে ক্যাম্পাসে অবস্থান করতে না পারেন, সে বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। আদালত বলেছেন, তবে তদন্তের প্রয়োজনে কমিটি তাঁদের ডাকতে পারবে। পাশাপাশি ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করারও নির্দেশ দেন আদালত। এরপর ছাত্রলীগ নেত্রী সানজিদা ও তাঁর সহযোগী তাবাসসুম ইসলাম বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ক্যাম্পাস ছেড়ে যান।
হাইকোর্টের নির্দেশে তদন্ত কমিটি গঠন
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে ছাত্রী নিপীড়নের ঘটনায় হাইকোর্টের নির্দেশে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম এই কমিটি গঠন করেন।
কমিটির সদস্যরা হলেন কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আ ন ম আবুজর গিফারী, সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদা সুলতানা এবং ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও সহকারী প্রক্টর শাহবুব আলম।
আজ বেলা ১১টার দিকে কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, আদালতের নির্দেশে কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির সদস্যদের জানানো হয়েছে। এখন তাঁরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখবেন।
কমিটির সদস্যরা আজ কাজ শুরু করেছেন।