উন্নয়ন দেখে আমরা বলি ‘জয় বাংলা’, আর লুটেরারা বলে ‘এনজয় বাংলা’: মেনন

ওয়ার্কার্স পার্টির বরিশাল বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতা দেন দলটির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। আজ শনিবার বিকেলে নগরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণেছবি: প্রথম আলো

যে উন্নয়ন প্রান্তিক মানুষকে সবল করে না, তা টেকসই হয় না বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। তিনি বলেছেন, ‘এখন কতিপয় লুটেরা ধনিক, সামরিক-বেসামরিক আমলার কাছে পুরো দেশ জিম্মি। বঙ্গবন্ধু এদের নাম দিয়েছিলেন “চাটার দল”। কিন্তু এরা এখন আর চাটে না, গিলে খায়, ব্যাংক ফোকলা করে ফেলে।’

আজ শনিবার বিকেলে বরিশাল নগরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত ওয়ার্কার্স পার্টির বরিশাল বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন রাশেদ খান মেনন।

আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, তারা হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করে আর সাধারণ মানুষ উন্নয়নের দিকে বিস্ময়ের সঙ্গে তাকিয়ে দেখলেও টিসিবির পণ্যের জন্য লাইন ছাড়া সংসার চালানোর কোনো উপায় খুঁজে পান না। এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে দেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রা মুখ থুবড়ে পড়বে।

সরকারের ১৪–দলীয় জোটের শরিক প্রবীণ সংসদ সদস্য রাশেদ খান মেনন আরও বলেন, ‘দেশে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে, এটা অস্বীকার করার উপায় নেই। এই উন্নয়ন দেখে আমরা এবং দেশের মানুষ বলি, জয় বাংলা। আর লুটেরার দল বলে, এনজয় বাংলা। তার মানে তারা বলে, বাংলাদেশকে এনজয় করো। এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে দেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রা মুখ থুবড়ে পড়বে। ডলার–সংকটের মতো নতুন নতুন সংকট দেশকে পিছিয়ে দেবে।’

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে বিএনপির বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে রাশেদ খান মেনন বলেন, ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপির দুঃশাসনের সেই আমল দেশবাসী আজও ভুলে যায়নি। বিএনপি যতই ভালো কথা বলুক না কেন, দুর্নীতির সেই পুরোনো স্বর্গরাজ্য ফিরে পেতেই তারা আবার মরিয়া হয়ে উঠেছে।

বিএনপি পরিকল্পিতভাবে দেশকে সংঘাত-সংঘর্ষের দিকে ঠেলে দিচ্ছে অভিযোগ এনে সমাবেশে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খানে মেনন বলেন, দেশবাসী অতীতে যেমন তাদের জ্বালাও-পোড়াও, আগুন–সন্ত্রাস প্রতিহত করেছে, এবারও বিএনপি-জামায়াতের নতুন করে সেই ষড়যন্ত্র প্রতিরোধ করবে। তারা যতই ষড়যন্ত্র করুক, নির্বাচন যথাসময়ে এবং সংবিধান অনুযায়ী অনুষ্ঠিত হবে।

সমাবেশে ওয়ার্কার্স পার্টির পলিট ব্যুরোর সদস্য ও সংসদ সদস্য মোস্তফা লুৎফুল্লাহ বলেন, সমাজ ও রাষ্ট্রের সব স্তরের দুর্নীতি প্রতিরোধ, চাল-ডালসহ সব প্রকার পণ্যের দাম ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখতে হবে। সামাজিক নিরাপত্তা খাতের বরাদ্দ আরও বাড়ানো প্রয়োজন। বয়স্ক ও বিধবা ভাতা নিয়ে দলীয়করণ ও দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে। শিক্ষা, সংস্কৃতি ও শিল্পের ক্ষেত্রে ধর্মবাদীদের অশুভ তৎপরতা প্রতিরোধ করতে হবে।

বরিশাল জেলা ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি অধ্যাপক নজরুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বিভাগীয় সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন দলের পলিট ব্যুরোর সদস্য মোস্তফা লুৎফুল্লাহ ও আমিনুল ইসলাম। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন পিরোজপুর জেলা ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি খান রুস্তম আলী, পটুয়াখালী জেলা শাখার সভাপতি অনিমেশ হাওলাদার, কেন্দ্রীয় সদস্য বি এম শাজাহান ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাম্মেল হক। সমাবেশ সঞ্চালনা করেন বরিশাল জেলা ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক শেখ টিপু সুলতান। সমাবেশে বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলার নেতারা যোগ দেন।