রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শারীরিক প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী নাদিম আলী
ছবি: প্রথম আলো

আবাসিক হলে নিজের নামে বরাদ্দকৃত আসনে উঠতে হয়রানির শিকার হওয়া রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাদিম আলী অবশেষে হলে আসন বরাদ্দ পেয়েছেন। আজ বুধবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়াউর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ সুজন সেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

নাদিম আলী শহীদ জিয়াউর রহমান হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ছাত্র। তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর থানার নাদেরাবাদ গ্রামের মো. বাইরুল ইসলামের ছেলে। বাবা পেশায় একজন দিনমজুর।

আরও পড়ুন

বরাদ্দ পেয়েও ছাত্রলীগ নেতাদের বাধায় সিটে উঠতে পারেননি প্রতিবন্ধী ছাত্র, থাকেন মেঝেতে

এর আগে আজ সকালে প্রথম আলো অনলাইনে ‘বরাদ্দ পেয়েও ছাত্রলীগ নেতাদের বাধায় সিটে উঠতে পারেননি প্রতিবন্ধী ছাত্র, থাকেন মেঝেতে’ একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপরে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদটি প্রকাশিত হয়।

এ বিষয়ে শহীদ জিয়াউর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ সুজন সেন বলেন, ‘নাদিম আলীকে তার বরাদ্দকৃত আসনেই (২৫৫) উঠিয়ে দিয়েছি। আগেও সে ওই সিটে ছিল। আশা করছি, আর কোনো সমস্যা হবে না।’

নাদিম আলী বলেন, ‘সবাইকে অনেক ধন্যবাদ আমার পাশে থাকার জন্য। আমি ২৫৫ নম্বর রুমেই আসন বরাদ্দ পেয়েছি। আজ দুপুরে প্রাধ্যক্ষ স্যার আমাকে ওই সিটে উঠিয়ে দেন।’

নাদিম আলীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, চার বছর বয়সে তাঁর বাঁ পা অচল হয়ে যায়। এর পর থেকে ডান পায়ে ভর করেই চলাচল করতে হয় তাঁকে। পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থা নাজুক। অনেক প্রতিকূলতা পার হয়ে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত এসেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর অনেক কষ্টে আবাসিক হলের একটি কক্ষে সিট পেলেও এত দিন মেঝেতে অবস্থান করছিলেন তিনি। গত চার মাসে চারবার নাদিম আলীর জন্য বরাদ্দকৃত সিট পরিবর্তন করা হলেও তিনি সেখানে উঠতে বা থাকতে পারেননি। ফলে বাধ্য হয়ে হলের মেঝেতে থাকতেন তিনি। এ বিষয়ে কথা বলতে গেলে হল প্রাধ্যক্ষ তাঁর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন বলে তাঁর অভিযোগ।

এর আগে নাদিম আলী বলেছিলেন, ‘শারীরিক প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের নিয়ে কাজ করা সংগঠন পিডিএফের (ফিজিক্যালি চ্যালেঞ্জ ডেভেলপমেন্ট) সুপারিশের মাধ্যমে গত বছরের ২৬ নভেম্বর প্রাধ্যক্ষের কাছে আবেদন করি। এর পরিপ্রেক্ষিতে পরের দিন ২৭ নভেম্বর হলের তৃতীয় ব্লকের নিচতলার ১৫২ নম্বর কক্ষ বরাদ্দ দেওয়া হয়। কিন্তু হল ছাত্রলীগের সভাপতি রাশেদ আলী তাঁর অনুসারী নাঈম নামের এক শিক্ষার্থীকে ওই সিটে তোলেন। এতে দুই মাস ওই কক্ষে থাকতে পারিনি আমি। পরে একদিন হল প্রাধ্যক্ষকে বিষয়টি জানালে তিনি আমার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন।’