সাবেক সংসদ সদস্য দেলোয়ার হোসেনের মৃত্যুতে বরগুনায় শোকের ছায়া

সাবেক সংসদ সদস্য দেলোয়ার হোসেন
ছবি: সংগৃহীত

বরগুনা-১ (সদর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেনের মৃত্যুতে শোকে মুহ্যমান বরগুনার সাধারণ মানুষ। ৬৭ বছর বয়সে আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৭টায় বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি মারা যান। তিনি স্ত্রী, এক মেয়ে রেখে গেছেন।

দেলোয়ার হোসেনের মরদেহ আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় বরগুনায় নেওয়া হয়। এরপর দুপুর ১২টায় সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য রাখা হয় বরগুনা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে। সেখানে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, সিপিবিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা তাঁর কফিনে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। বেলা দুইটায় বরগুনা সার্কিট হাউসের সামনে কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে তাঁর প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। বিকেল সাড়ে চারটায় তাঁর গ্রামের বাড়ি বরগুনা সদর উপজেলার আয়লা-পাতাকাটা ইউনিয়নের গাবতলী গ্রামের বাড়িতে তাঁর দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

বরগুনা কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে দেলোয়ার হোসেনের মরদেহে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান রাজনৈতিক, সামাজিক ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা
ছবি: প্রথম আলো

দেলোয়ার হোসেনের ছোট ভাই আয়লা-পাতাকাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন বলেন, তাঁকে গ্রামের বাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।

দেলোয়ার হোসেন ছাত্রাবস্থায় মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। তিনি ১৯৭৭ থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত বরগুনা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। ১৯৮৩ সালে তিনি সদর উপজেলার আয়লা-পাতাকাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ১৯৯০ সালে তিনি বরগুনা সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।

২০০১ সালে অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন চেয়ে না পাওয়ায় তিনি বরগুনা-১ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরে তিনি পুনরায় আওয়ামী লীগে ফিরে আসেন। এরপর তিনি ২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত বরগুনা জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ২০২২ সালের ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত তিনি এ দায়িত্ব পালন করেন। দেলোয়ার হোসেন দীর্ঘদিন ধরে কিডনিজনিত রোগে ভুগছিলেন।

বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম সরোয়ার বলেন, দেলোয়ার হোসেন ছিলেন রাজনীতির এক নির্মোহ ব্যক্তি। একজন প্রকৃত দেশপ্রেমিক, সাহসী ও গণমানুষের নেতা হিসেবে তিনি স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। তাঁর মৃত্যুতে বরগুনার মানুষ একজন সাহসী, জনদরদি নেতাকে হারাল। তাঁর শূন্যতা পূরণ হওয়ার নয়।