নৌকার কর্মীদের ওপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তারে সময় বেঁধে দিলেন মমতাজ

মমতাজ বেগমফাইল ছবি

মানিকগঞ্জ-২ (সিঙ্গাইর, হরিরামপুর ও সদরের একাংশ) আসনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় এবং পরবর্তী সময় নৌকার সমর্থকদের ওপর হামলার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে ২৪ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়েছেন আওয়ামী লীগের পরাজিত প্রার্থী মমতাজ বেগম। তা না হলে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের নিয়ে নিজেই হামলাকারীদের প্রতিহত করবেন বলে জানিয়েছেন আসনটির দুবারের সাবেক এই সংসদ সদস্য।

আজ শুক্রবার বিকেলে মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ হুঁশিয়ারি দেন মমতাজ বেগম। পরাজিত এই প্রার্থীর দাবি, তাঁর অনুসারীদের ওপর হামলার ঘটনাগুলোয় নির্বাচনে বিজয়ী ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী দেওয়ান জাহিদ আহমেদ জড়িত।

ভোটের আগেই মমতাজ বেগম ও দেওয়ান জাহিদের অনুসারীদের মধ্যে হুমকি–ধমকি, মারধর ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। হরিরামপুর থানার পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ভোটের দিন সন্ধ্যায় হরিরামপুর উপজেলার বাহেরচর গ্রামে মমতাজের সমর্থক রমজান আলী বাড়ির টিন ভাঙচুর করেন দেওয়ান জাহিদের অনুসারীরা। এ ঘটনায় রমজান আলী থানায় মামলা করেছেন। গত সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে মমতাজের অনুসারী এবং জেলা আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক আবিদ হাসানের বাড়িতে গিয়ে তাঁকে হুমকি–ধমকি দেওয়া হয়। এ ঘটনায় আবিদ হাসান বাদী হয়ে মামলা করেছেন। গত বুধবার বিকেলে কালই গোপালপুর এলাকায় স্থানীয় গালা ইউনিয়ন যুবলীগের সহসভাপতি দুলাল সূত্রধরকে মারধর করা হয়।

মমতাজ বেগম অভিযোগ করে বলেন, নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর সংসদ সদস্য জাহিদ আহমেদের সমর্থকেরা তাঁর (মমতাজ) কর্মী-সমর্থকদের মারধর এবং ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা করছেন। বিভিন্ন স্থানে এ হামলায় অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। এসব ঘটনায় একাধিক মামলা হলেও প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। বিজয়ী প্রার্থী বিএনপি-জামায়াতকে সঙ্গে নিয়ে আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করার চেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে বলে দাবি তাঁর।

বর্তমান পরিস্থিতিতে দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে জানিয়ে মমতাজ বেগম বলেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হরিরামপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দেওয়ান সাইদুর রহমানের ছেলে দেওয়ান নবীনূর, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রাজিব হাসানসহ হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করতে হবে। অন্যথায় নিজেরাই রাস্তায় নেমে প্রতিহত করাসহ দলীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে হামলাকারীদের বাড়িঘর ঘেরাও করা হবে।

মতবিনিময় সভার পর সন্ধ্যায় হরিরামপুর থানায় গিয়ে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ নূর-এ আলমের সঙ্গে বৈঠক করেন মমতাজ। এ সময় হামলার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান। এ সময় মানিকগঞ্জ-২ আসনে পরাজিত স্বতন্ত্র প্রার্থী মুশফিকুর রহমান খান, সিঙ্গাইর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শহিদুর রহমান, সিঙ্গাইর পৌরসভার মেয়র আবু নাঈম মো. বাশার, জেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মো. ইউসুফ আলী, যুব ও ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক আবিদ হাসান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এ বিষয়ে নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য দেওয়ান জাহিদ আহমেদ বলেন, তাঁর কোনো কর্মী-সমর্থক মমতাজের কর্মী-সমর্থকদের ওপর হামলা করেননি। প্রতিপক্ষের লোকজনই তাঁর কর্মী-সমর্থকদের ওপর হামলা করেন।

এ বিষয়ে ওসি শাহ নূর-এ আলম বলেন, হামলার ঘটনায় দুটি মামলা হয়েছে। তবে আসামিদের সবাই আদালত থেকে জামিন নিয়েছেন। আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের কোনো গাফিলতি নেই।