কুমিল্লা-৭ আসনে বিএনপির প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে কাফনের কাপড় পরে বিক্ষোভ
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুমিল্লা-৭ আসনে প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে কাফনের কাপড় পরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন বিএনপির এক পক্ষের নেতা-কর্মীরা।
২৪ ডিসেম্বর লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) মহাসচিবের পদ থেকে পদত্যাগ করে আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপিতে যোগ দেন রেদোয়ান আহমেদ। সেদিন চান্দিনা উপজেলা নিয়ে গঠিত কুমিল্লা-৭ আসনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে রেদোয়ান আহমেদ নির্বাচনে অংশ নেবেন বলে ঘোষণা দেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তাঁর মনোনয়ন পরিবর্তনের দাবিতে চান্দিনা উপজেলা বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা এ বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন।
আজ শনিবার বিকেলে চান্দিনা সরকারি মডেল পাইলট উচ্চবিদ্যালয় মাঠে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন কুমিল্লা–৭ আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী চান্দিনা উপজেলা বিএনপির সভাপতি আতিকুল আলমের সমর্থকেরা। সমাবেশ শেষে তাঁরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলে কয়েকজনকে কাফনের কাপড় পরে থাকতে দেখা যায়। তাঁরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চান্দিনা বাসস্ট্যান্ডে কিছুক্ষণ অবস্থান করেন। পরে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা তাঁদের মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দেন।
কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া বিএনপির নেতা-কর্মীরা জানান, কুমিল্লা-৭ আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে মাঠে আছেন চান্দিনা উপজেলা বিএনপির সভাপতি আতিকুল আলম। এলডিপির মহাসচিব পদ থেকে অব্যাহতি নিয়ে বিএনপিতে যোগদান করে এই আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা রেদোয়ান আহমেদ। এতে আতিকুল মনোনয়নবঞ্চিত হয়েছেন। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন তাঁর সমর্থক স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মীরা। ২৪ ডিসেম্বর বিএনপিতে যোগদান করা রেদোয়ান আহমেদকে ওই দিন বেলা দুইটার দিকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়। সেদিন বিকেলেই আতিকুল আলমের পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন তাঁর সমর্থক নেতা-কর্মীরা।
চান্দিনা উপজেলা বিএনপির সভাপতি আতিকুল আলম বলেন, ‘চান্দিনার বিএনপি নেতা-কর্মীরা এই মনোনয়নকে কখনো মেনে নেবেন না। আমাদের নেতা তারেক রহমানের কাছে এই আসনে মনোনয়ন পুনর্বিবেচনার দাবি জানাচ্ছি।’
বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য দেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি আতিকুল আলম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা মফিজ উদ্দীন ভূঁইয়াসহ স্থানীয় জ্যেষ্ঠ নেতারা। সমাবেশে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চান্দিনা পৌর বিএনপির সভাপতি এ বি এম সিরাজুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. আলমগীর খান, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী আরশাদ, কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক মো. শহীদুল ইসলাম, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক শাহজাহান মুন্সী, পৌর যুবদলের আহ্বায়ক মো. নূরুল ইসলাম মুন্সী, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক সাইফুল্লাহ প্রমুখ।
রেদোয়ান আহমেদ ১৯৮৬ সালে জাতীয় পার্টি থেকে প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৯৯১ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে বিজয়ী হন তিনি। ২০০১ সালে তিনি বিএনপির প্রার্থী হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর বেগম খালেদা জিয়ার সরকারে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেন। ২০০৬ সালে বিএনপি ছেড়ে যোগ দেন অলি আহমদের এলডিপি দলে। দলটির মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন দীর্ঘদিন। সবশেষ ২০১৮ সালের নির্বাচনে এই আসনে বিএনপি–জোটের প্রার্থী ছিলেন তিনি। এদিকে ২০০৬ সালে রেদোয়ান আহমেদ দল ছাড়ার পর আতিকুল আলমের বাবা খোরশেদ আলম চান্দিনা উপজেলা বিএনপির হাল ধরেন। তিনি চান্দিনা উপজেলা ও কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির সভাপতি ছিলেন। ২০১৮ সালে তাঁর মৃত্যুর পর ছেলে আতিকুল আলম উপজেলা বিএনপির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।