মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের পর আবেগঘন স্ট্যাটাস উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতির

টাঙ্গাইল জেলার মানচিত্র

টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নিজের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে ফেসবুকে আবেগঘন স্ট্যাটাস দিয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মীর শরীফ মাহমুদ। গতকাল রোববার শেষ দিনে তিনি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন। রাত আটটার দিকে তিনি ওই স্ট্যাটাস দেন।

মীর শরীফ মাহমুদ ওই স্ট্যাটাসে উল্লেখ করেন, তিনি আগামী ৫ জুন অনুষ্ঠেয় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিতে মির্জাপুরবাসী ও দলীয় নেতা-কর্মীদের অনুরোধে প্রার্থী হয়েছিলেন। দীর্ঘ ৪৫ বছর ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের হয়ে আন্দোলন, সংগ্রাম ও হরতাল-মিছিলে অংশ নেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুর পর ফজলুর রহমান খান ফারুকের (টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান) নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে ছাত্ররাজনীতিতে যুক্ত হয়েছিলেন। সংগঠনকে সুসংগঠিত করতে জীবনের দুই-তৃতীয়াংশ সময় রাজনীতিতে ব্যয় করেছেন।

মীর শরীফ মাহমুদ আরও উল্লেখ করেন, গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দল (মির্জাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ) দুই ভাগে বিভক্ত হয়েছে। উপজেলা নির্বাচন সামনে রেখে দলে আরও বেশি বিভক্তি হওয়ার আশঙ্কায় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও অন্য নেতাদের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাহরীম হোসেনের (উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী) সঙ্গেও একজন প্রার্থী করতে বারবার বৈঠক করেছেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত সব বৈঠক ব্যর্থ হয়। ক্ষমতার লিপ্সায় কেউ কাউকে ছাড় দেওয়ার মন-মানসিকতা দেখাননি। তাই তিনি নিজ স্বার্থ ত্যাগ করে সংগঠনের বৃহত্তর স্বার্থে তিনি তাঁর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। একই সঙ্গে তিনি জননেত্রী শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে দলীয় ঐক্য বজায় রাখারও আহ্বান জানিয়েছেন।

তাঁর ওই স্ট্যাটাসে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সৈয়দ ওয়াহিদ ইকবাল মন্তব্য করে বলেন, ‘আপনার নেতৃত্বে রাজনীতি করেছি ছাত্রজীবন থেকে। সারা জীবন আপনার পাশে থাকব। দলের প্রতি আপনার এই ভালোবাসা মনে রাখবে আদর্শের কর্মীরা।’

উপজেলার উয়ার্শী ইউপি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মনির খান ওই স্ট্যাটাসে মন্তব্য করে বলেন, ‘হায় রে ফেসবুক, আমরা কত চাটুকার, প্রার্থিতা প্রত্যাহারে কত ধন্যবাদ অথচ গত কিছুদিন পূর্বেও মীর শরীফ মাহমুদ এর ফেসবুক স্ট্যাটাসে কোনো লাইক বা কমেন্টস দেওয়ার সাহস হয়নি।’

মুঠোফোনে মীর শরীফ মাহমুদ বলেন, ‘উপজেলা আওয়ামী লীগের বিভক্তি রুখতে প্রার্থীদের সবার সঙ্গে কথা বলেছেন কিন্তু লাভ হয়নি। এ কারণে নিজে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছি। তারপরও নির্বাচনের প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এস এম মোজাহিদুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক তাহরীম হোসেনের সমর্থকেরা দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়বেন। প্রার্থীদের এক করতে পারেননি। কেন্দ্রীয় নির্দেশনাও নেই। যে যার মতো নির্বাচন করতে পারবেন। নির্বাচন করুক।’