বর্জ্য অপসারণের ব্যবস্থা নেই

স্থানীয় ব্যক্তিরা যত্রতত্র ও খোলা জায়গায় ময়লা-আবর্জনা স্তূপ করে রাখেন। এতে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ায় মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।

রংপুর সিটি করপোরেশনের ১৩, ১৪, ১৫ ওয়ার্ড ৩টি বর্ধিত এলাকায় হলেও মূল শহরের কাছাকাছি। এলাকায় নতুন নতুন ভবন নির্মাণ হয়েছে। হয়েছে বেসরকারি হাসপাতাল ও কলেজ। কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের পাশে বড় বাজারও রয়েছে। এত স্থাপনা নির্মাণ হওয়ার পরও এসব এলাকায় এখনো বর্জ্য অপসারণের ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়নি।

কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে নিসবেতগঞ্জ ও বিনোদন পার্ক প্রয়াসে যাওয়ার পথে সড়কের দক্ষিণ দিকের এলাকাগুলো ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যে পড়েছে। এর মধ্যে রয়েছে পীরজাবাদ, দামোদুরপুর, সম্মানীপুর। এখানে রয়েছে বেসরকারি প্রাইম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, কেরামত আলী কলেজসহ আরও কয়েকটি বেসরকারি স্কুল ও কলেজ। 

পীরজাবাদ এলাকার ব্যবসায়ী আশরাফুল ইসলাম বলেন, মূল শহরের লাগোয়া এসব এলাকায় গত ১০ বছরে নতুন নতুন ভবন গড়ে উঠেছে। কিন্তু এখনো ময়লা অপসারণের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। স্থানীয় ব্যক্তিরা যত্রতত্র ও খোলা জায়গায় ময়লা–আবর্জনা স্তূপ করে রাখেন।

১৩ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ফজলে এলাহী বলেন, ‘অনেক রাস্তা পাকা করেছি। কিছু রাস্তা কংক্রিটের ঢালাইও হয়েছে। বাজেট না থাকায় নালার কাজ হয়নি।’ 

এই ওয়ার্ডের সম্ভাব্য কাউন্সিলর প্রার্থী ও ওয়ার্ড জাতীয় পার্টির সভাপতি হাফিজুল ইসলাম। তিনি তাঁর ওয়ার্ডকে অনগ্রসর এলাকা হিসেবে অভিহিত করেছেন। নির্বাচিত হলে তিনি এলাকায় উন্নয়নমূলক নানা কাজ করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন।  

মনোহরপুর, বড়বাড়ি, দেওডোবা, ডাংগিরপাড় এলাকা নিয়ে ১৪ নম্বর ওয়ার্ড। ওয়ার্ডটি কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের দক্ষিণ দিকে। স্থানীয় ব্যক্তিরা বলেন, বাস টার্মিনাল বাজারের বর্জ্য অপসারণের ব্যবস্থা নেই। বৃষ্টি হলে এসব বর্জ্য পানিতে ভেসে আশপাশের আবাদি জমিতে চলে যায়। পানিনিষ্কাশনেরও কোনো ব্যবস্থা নেই। এর ফলে ফসল নষ্ট হয়। স্থানীয় ডাংগিরপাড় এলাকার ব্যবসায়ী জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘ রাস্তা পাকা হলেও বাসাবাড়ি থেকে ময়লা নিয়ে যায় না। ময়লার ট্রাক এলাকায় ঢোকে না।’

১৪ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর বিএনপি সমর্থক শফিকুল ইসলাম বলেন, বেসরকারি ক্লিনিকের বর্জ্য সিটি করপোরেশনের ট্রাকে করে নিয়ে যাওয়া হলেও পুরোদমে বর্জ্য অপসারণ করা সম্ভব হয়নি। এলাকার উন্নয়নে কাজ করেছেন। চলাচলের জন্য সড়ক পাকা করা হয়েছে। সড়কে বাতির ব্যবস্থা রয়েছে। 

এই ওয়ার্ডের সম্ভাব্য কাউন্সিলর প্রার্থী জাতীয় পার্টির নেতা নূর আলম সিদ্দিকী। তিনি বলেন, এ এলাকাটি আগে সাতগাড়া ইউনিয়নের অংশ ছিল। তাঁর বাবা ওই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানও ছিলেন। জনগণের দাবি-দাওয়া ও আকাঙ্ক্ষা পূরণে তিনি নির্বাচন করবেন।

দর্শনা পাহাড়ী, বিনোদপুর, আশরতপুর, ঘাঘটপাড়া, মাছুয়াপাড়া, আক্কেলপুর, হরিরামপুর, দুর্গাপুর, ফতেপুর এলাকা নিয়ে ১৫ নম্বর ওয়ার্ড। সরেজমিনে দেখা গেছে, বসবাসের জন্য নতুন নতুন বাড়িঘর নির্মাণ হলেও এখনো ধানখেত রয়েছে। তবে সড়ক পাকা হয়েছে। সড়কে বাতি থাকলেও তা অপর্যাপ্ত। এ ওয়ার্ডেও আসে না সিটি করপোরেশনের আবর্জনা সংগ্রহের গাড়ি।

ঘাঘটপাড়া এলাকা সেকেন্দার আলী বলেন, ‘গ্রামের মতো এলাও হামার এলাকা। শহর হইতে অনেক সময় লাগবে।’ 

১৫ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর ও তাজহাট থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া আলম বলেন, সড়ক পাকা করেছেন। সড়কবাতিও রয়েছে। একটি এলাকার উন্নয়নের জন্য পাঁচ বছর যথেষ্ট সময় নয়। 

এ ওয়ার্ডের সম্ভাব্য কাউন্সিলর প্রার্থী শাফিউল ইসলাম জাতীয় পার্টি কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক এবং জেলা কমিটির সদস্য। তিনি বলেন, এলাকায় এখনো ময়লা–আবর্জনা অপসারণের ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি। সড়কবাতি অপর্যাপ্ত। অলিগলির রাস্তাগুলো এখনো কাঁচা।