ভোট রাতে হয়েছে, জেনে-বুঝেও ভোট বর্জন করিনি: পরাজিত স্বতন্ত্র প্রার্থী

রংপুরের বদরগঞ্জে নিজ বাড়িতে কর্মী সমাবেশে বক্তব্য দিচ্ছেন পরাজিত স্বতন্ত্র প্রার্থী ও কৃষক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বিশ্বনাথ সরকার। শনিবার বিকেলে উপজেলার মোস্তফাপুর সরকারপাড়া গ্রামেছবি: প্রথম আলো

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রংপুর-২ (বদরগঞ্জ-তারাগঞ্জ) আসনের ভোট রাত তিনটার দিকে হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী ও কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বিশ্বনাথ সরকার ওরফে বিটু। নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার পর আজ শনিবার বিকেলে বদরগঞ্জের মোস্তফাপুর সরকারপাড়া গ্রামে নিজ বাড়িতে কর্মী সমাবেশে তিনি এ অভিযোগ করেন।

বিশ্বনাথ সরকার ট্রাক প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেন। তাঁর বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন সংসদ সদস্য আবুল কালাম মো. আহসানুল হক ওরফে ডিউক চৌধুরী। নির্বাচন কমিশন ঘোষিত ফলাফলে নৌকা প্রতীকে তিনি ৮১ হাজার ৫৯৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিশ্বনাথ সরকার পান ৬১ হাজার ৫৮৩ ভোট। আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী আনিছুল ইসলাম ২৪ হাজার ৬৪০ ভোট পেয়েছেন।

কর্মী সমাবেশে বিশ্বনাথ সরকার বলেন, ‘আমরা পরাজিত হইনি। জোর করে আমাকে পরাজিত করা হয়েছে। প্রশাসন কথা রাখেনি। আমাদের ভোট হয়েছে রাত তিনটার সময়। দুপুরের দিকে অনেকেই আমাকে ভোট বর্জন করতে বলেছিল। আমি করিনি। কারণ, আমি আওয়ামী লীগ করি। কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের জয়েন্ট সেক্রেটারি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুগত সৈনিক। তাঁর নির্দেশনার বাইরে আমি কখনো কাজ করব না। তাই সবকিছু জেনে-বুঝেও ভোট বর্জন করিনি।’ কর্মী-সমর্থকদের ওপর হামলার বিষয়ে বলেন, ‘সব কর্মীর দায়ভার নিয়ে বলছি, যেকোনো কিছু মোকাবিলায় আমি বদ্ধপরিকর। এ ক্ষেত্রে কর্মীদের যেকোনো সমস্যায় পাশে আছি, থাকব।’

বদরগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম বলেন, ‘ভোটে ব্যাপক কারচুপিসহ বিভিন্ন কেন্দ্রে ট্রাক প্রতীকের এজেন্টদের বের করে দিয়ে নৌকা প্রতীকে সিল মারা হয়েছে। মধুপুরের ময়নাকুড়ি স্কুলের ভোটকেন্দ্রটি আমার এলাকায়। এই কেন্দ্রে ৩০০ ভোটারও ভোট দেননি। তবু সেখানে ১ হাজার ৮০০ ভোট পড়েছে বলে দেখানো হয়েছে।’

বদরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আজিজার রহমানের সভাপতিত্বে কর্মী সমাবেশে বিভিন্ন এলাকার কর্মীরাও বক্তব্য দেন। ট্রাক প্রতীকের বদরগঞ্জের কর্মী মমিনুল হক বলেন, ‘বিশ্বনাথ সরকার জনগণের ভোটে এমপি নির্বাচিত হলেও রাষ্ট্রযন্ত্রের কাছে হেরেছেন।’

তারাগঞ্জের আলমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম বলেন, ‘আমরা নীরব কারচুপির কারণে হেরেছি।’

স্বতন্ত্র প্রার্থী বিশ্বনাথ সরকার ও তাঁর কর্মী-সমর্থকদের অভিযোগের বিষয়ে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও বদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজির হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, রংপুর-২ (বদরগঞ্জ-তারাগঞ্জ) আসনে স্বচ্ছ ও শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।