মহানন্দা নদীতে পাথর তোলা নিয়ে মারধরের ঘটনায় বিজিবির মামলা, গ্রেপ্তার ৪

গ্রেপ্তার
প্রতীকী ছবি

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলায় ভারত সীমান্তঘেঁষা মহানন্দা নদীতে পাথর তোলা নিয়ে বিজিবির সদস্য ও পাথরশ্রমিকদের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা, ধস্তাধস্তি ও মারধরের ঘটনায় মামলা হয়েছে। গতকাল শনিবার সন্ধ্যা সোয়া সাতটার দিকে তেঁতুলিয়ার রনচণ্ডী বিওপির সুবেদার মো. হাবিবুর রহমান বাদী হয়ে ২৪ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা ২০০ থেকে ২৫০ জনকে আসামি করে মামলা করেন। এরই মধ্যে আটক চারজনকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

মামলায় দলবদ্ধ হয়ে টহলকারী বিজিবি সদস্যদের কাজে বাধাদান, আক্রমণ ও এক বিজিবি সদস্যকে মারধর করে আহত করার অভিযোগ আনা হয়েছে। এ ঘটনায় আটক তেঁতুলিয়ার ভাদ্রুবাড়ি এলাকার ট্রাক্টরচালক সোলেমান আলী (৩০), একই এলাকার পাথর ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম (২৪), রণচণ্ডী এলাকার ট্রাক্টরচালক অমিত হাসান (২৩) ও সদর উপজেলার তালমা এলাকার ট্রাক্টরচালক শিমুল হাসানকে (২৮) ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আজ রোববার দুপুরে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গতকাল সকাল ৯টার দিকে তেঁতুলিয়া উপজেলার তেঁতুলিয়া সদর ইউনিয়নের ভাদ্রুবাড়ি এলাকার ৪৪৫ নম্বর মেইন পিলারের ১৭ নম্বর সাব–পিলারের কাছে যান রণচণ্ডী বিওপির টহলরত বিজিবি সদস্যরা। তাঁরা সেখানে দেখেন, কয়েক ব্যক্তি ট্রাক্টরে করে পাথর নিয়ে যাচ্ছেন। তাঁরা ট্রাক্টরটি থামিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে পাথর বহনকারীরা উত্তেজিত হয়ে চিৎকার শুরু করেন। বিজিবির সদস্যরা তাঁদের বোঝানোর পাশাপাশি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানান।

এরই মধ্যে সেখানে ২০০ থেকে ২৫০ জন ব্যক্তি দলবদ্ধ হয়ে বিজিবির সদস্যদের ওপর চড়াও হয়ে গালিগালাজ করতে থাকেন। একপর্যায়ে তাঁরা বিজিবির সদস্যদের কাজে বাধা দেন, হামলা করেন ও বিজিবির সিপাহি মো. খোরশেদ আলমকে মারধর করে আহত করেন। পরে উপজেলা প্রশাসনের লোকজন ও জনপ্রতিনিধিরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ ঘটনায় বেলা দেড়টার দিকে ঘটনাস্থল থেকে ৩০ সিএফটি পাথর জব্দ করা হয়েছে। আর আহত সিপাহি খোরশেদ আলমকে তেঁতুলিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

আরও পড়ুন

শ্রমিকদের ভাষ্য, শনিবার সকালে পাথরশ্রমিকেরা মহানন্দা নদী থেকে পাথর উত্তোলন করে ট্রাক্টরে করে নিয়ে যাওয়ার সময় বাধা দেন বিজিবির সদস্যরা। এ সময় শ্রমিকদের সঙ্গে বিজিবির সদস্যদের বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। সেখানে বিজিবি পাথর ব্যবসায়ী, ট্রাক্টরচালকসহ চারজনকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। এক পর্যায়ে বিজিবির লাঠিপেটায় বেশ কয়েক নারী-পুরুষ আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে অন্তত ১২ জন তেঁতুলিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন। পরে পুলিশ, স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

আজ রোববার দুপুরে মুঠোফোনে তেঁতুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু সাঈদ চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, পাথরশ্রমিকেরা মহানন্দা নদীর ভারতীয় অংশে পাথর তুলতে গেলে বিজিবির সদস্যরা তাতে বাধা দেন। ট্রাক্টরে করে পাথর নিয়ে যাওয়ার সময় বিজিবির সদস্যদের সঙ্গে পাথরশ্রমিকদের বাগ্‌বিতণ্ডা ও ধস্তাধস্তি হয়। এ ঘটনায় বিজিবির পক্ষ থেকে মামলা করা হয়েছে। সেই মামলায় গ্রেপ্তার চারজনকে পাঠানো হয়েছে আদালতে। তবে শ্রমিকদের পক্ষ থেকে এখনো কেউ কোনো অভিযোগ করেননি।