ডিএনএ ও রক্ত পরীক্ষা করে আওয়ামী লীগের লোকদের চাকরি দেওয়া হতো: শামা ওবায়েদ
বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ বলেছেন, ‘কর্মসংস্থান থেকে শুরু করে প্রতিটা জায়গায় স্বৈরাচার শেখ হাসিনা দলীয়করণ করেছেন। সব জায়গায় তাঁর দলীয় ও পরিবারের লোকদের ঢুকিয়ে রেখে গেছেন। ডিএনএ ও রক্ত পরীক্ষা করে আওয়ামী লীগের লোকদের চাকরি দেওয়া হতো। এ জন্যই আমাদের ছাত্র-ছাত্রীরা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নেমেছিলেন।’
আজ বুধবার দুপুরে ফরিদপুরের সালথা উপজেলার নারানদিয়া জয়নদ্দীন মাতুব্বর উচ্চবিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শামা ওবায়েদ এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘আমরা অবশ্যই নির্বাচন চাই। নির্বাচন ছাড়া, একটি গণতান্ত্রিক উপায়ে নির্বাচিত দল ছাড়া বাংলাদেশে একটি গুণগত উন্নয়ন সম্ভব নয়।’
শিক্ষক–শিক্ষিকাদের উদ্দেশে শামা ওবায়েদ বলেন, ‘শিক্ষক-শিক্ষিকা যাঁরা এখানে আছেন, তাঁরা রাজনীতিকে বাইরে রেখে, দল-মতকে বাইরে রেখে, নিজের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে একটি পবিত্র প্রতিষ্ঠান হিসেবে গণ্য করে শুধু শিক্ষার জন্য কাজ করার চেষ্টা করবেন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কখনো রাজনীতি ঢোকাবেন না। শিক্ষকেরা রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়লে যেমন শিক্ষার ক্ষতি হবে, সমাজেরও ক্ষতি হবে।’
শামা ওবায়েদ বলেন, ‘ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে। এখন নতুন বাংলাদেশ গড়তে হবে। আর নতুন বাংলাদেশ গড়তে হলে আমাদের ভাই-বোনদের সুশিক্ষায় শিক্ষিত করতে হবে। যদি শিক্ষিত করতে হয়, তাহলে দলমতের ঊর্ধ্বে থেকে ছেলেমেয়েদের শিক্ষকদের ভালো শিক্ষা দিতে হবে। আমরা ৩১ দফা দিয়েছি। আমি এই স্কুলের শিক্ষকদের অনুরোধ করব, আপনারা ৩১ দফা পড়বেন। ছেলেমেয়েদের, আমাদের ইয়াং জেনারেশনকে বলবেন।’
বিএনপির কেন্দ্রীয় এই নেতা আরও বলেন, ‘একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে আমার এটা ভাবতে কষ্ট হয়, আমার ছেলেমেয়েরা যে বই পড়ে, সেই বই তৈরি হয় অন্য দেশে। কেন বাংলাদেশে আমাদের কি লোকজন নেই? আমরা কি স্বাবলম্বী না? আমরা অবশ্যই আমাদের পাঠ্যবই তৈরি করতে পারি। যেহেতু নতজানু ফ্যাসিবাদী একটি সরকার ক্ষমতায় ছিল, তারা এ দেশের ছেলেমেয়েদের কখনো মাথা তুলে দাঁড়াতে দেবে না, দেয়নি, তাই এ ব্যবস্থা করে রেখেছিল। শিক্ষা খাতে তারা বরাদ্দ দিয়েছিল অপ্রতুল। গত ১৫ বছর দেশে একটি স্বৈরাচারী সরকার ক্ষমতায় ছিল। তারা শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়ে গেছে। সাবেক শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি হাজার হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি করেছেন। আর হাসিনার নির্দেশে সেই আন্দোলনে নামা বহু ছাত্র-জনতাকে গুলি করে হত্যা করা হয়।’
শামা ওবায়েদ বলেন, সাধারণ জনগণ থেকে শুরু করে শিক্ষক, সাংবাদিক, চিকিৎসক ও রাজনীতিবিদসহ সবাইকে হাসিনার রোষানলে পড়তে হয়েছে। কেউ মুখ খুলতে পারেনি। কথা বললে, খুন, গুম ও নির্যাতন করা হয়েছে।
বিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠাতার ছেলে নুরুল ইসলাম এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সালথা উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান তালুকদার, নগরকান্দা উপজেলা বিএনপির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি হাবিবুর রহমান, সালথা উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খন্দকার খায়রুল বাসার, সালথা উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মো. আসাদ মাতুব্বর প্রমুখ।