মুঠোফোনে দলীয় কার্যালয়ে ডেকে এনে আ.লীগ নেতার ওপর হামলা, গ্রেপ্তার ৭

ফেনী জেলার মানচিত্র

ফেনীর পরশুরাম উপজেলায় দলীয় কোন্দলের জেরে এক আওয়ামী লীগ নেতাকে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে জখম করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে দলীয় কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে জড়িত অভিযোগে সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে।

আহত অনাদি রঞ্জন সাহা (৬৫) পরশুরাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি। তিনি ফেনী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। হামলাকারীরা সবাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌরসভার মেয়র নিজাম উদ্দিন আহমেদ চৌধুরীর অনুসারী বলে অভিযোগ অনাদি সাহার।

হামলার ঘটনায় রাতেই ১৭ জনের নামোল্লেখ করে পরশুরাম মডেল থানায় একটি মামলা করেছেন আহত অনাদি রঞ্জন সাহা। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন উপজেলার দক্ষিণ কোলাপাড়া গ্রামের মোস্তাফিজুর রহমান (৩৫), সলিয়া গ্রামের রফিকুল ইসলাম (৫১), উত্তর বাউরখুমা গ্রামের মোহাম্মদ ইব্রাহিম (৪৫), বেড়াবাড়িয়া গ্রামের মোহাম্মদ এয়াকুব ওরফে ভুট্টু (৩৮), উত্তর গুথুমা গ্রামের মিজানুর রহমান চৌধুরী (৪৪), উত্তর গুথুমা গ্রামের জাহিদুল ইসলাম (২৮) ও সলিয়া গ্রামের আবদুল মান্নান (৩৪)। তাঁরা সবাই স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী।

সম্প্রতি একটি জানাজায় অংশ নিতে গিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন মজুমদারের সঙ্গে বিরোধে জড়ান উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌরসভার মেয়র নিজাম উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী। সেখানে লাঞ্ছিত করা ও প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ তুলে পরস্পরের বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন দুজন। এ ঘটনায় একে অপরকে দোষারোপ করে পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলনও করেছেন। এ ঘটনার জেরে অনাদি রঞ্জন সাহার ওপর হামলা করা হতে পারে বলে ধারণা স্থানীয় নেতা-কর্মীদের।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, দলের এক কর্মী উপজেলা সাধারণ সম্পাদকের কথা বলে মুঠোফোনে অনাদি রঞ্জন সাহাকে কার্যালয়ে ডাকেন। তিনি উপজেলা কার্যালয়ের সামনে যেতেই তাঁর ওপর হামলা করা হয়। হামলার একপর্যায়ে তাঁর চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যান। পরে স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করান।

পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) রবিউল ইসলাম বলেন, অনাদি রঞ্জন সাহাকে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসা হয়েছিল। তাঁর পায়ের একাধিক স্থানে রড দিয়ে পিটিয়ে জখম করার আঘাত রয়েছে। তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফেনী জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অনাদি রঞ্জন সাহা প্রথম আলোকে বলেন, ‘মুঠোফোনে উপজেলার সলিয়া এলাকার একজন দলীয় কর্মী আমাকে ফোন দিয়ে বলেন, মেয়র দলীয় কার্যালয়ে আমাকে ডেকেছেন। কার্যালয়ের সামনে যেতেই আনোয়ার নামের একজনের নেতৃত্বে আমার ওপর হামলা করা হয়। হামলাকারীরা সবাই মেয়রের (নিজাম উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী) অনুসারী হিসেবে পরিচিত।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌরসভার মেয়র নিজাম উদ্দিন আহমেদ চৌধুরীর সঙ্গে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তিনি ফোন রিসিভ করেননি।