শুধু পাহাড়ে নয়, সারা দেশেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ব্যর্থ সরকার: জি এম কাদের

রংপুরে সার্কিট হাউসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের এমপি। রোববার বিকেলেছবি: মঈনুল ইসলাম

শুধু পাহাড়ে নয়, সারা দেশেই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি রক্ষায় সরকার ব্যর্থ হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদের। পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে রংপুরে সফরে এসে আজ রোববার বিকেলে সার্কিট হাউসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।

পাহাড়ি জনপদে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অবসান ঘটিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়ে জি এম কাদের বলেন, ‘পাহাড়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিষয়টি যেন স্বাভাবিক হয়ে না দাঁড়ায়। আমরা পাহাড়ে যেতে চাই, বসবাস করতে চাই। তবে বলতে পারি, প্রাথমিকভাবে তারা (সরকার) দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে।’

বিরোধী দলের এই নেতা বলেন, বর্তমানে শুধু পাহাড়ে নয়, সারা দেশেই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি রক্ষায় সরকার ব্যর্থ হচ্ছে। বিভিন্ন জায়গায় নির্বিচার মানুষ হত্যা হচ্ছে, শিশুদের শ্বাসরোধে হত্যা করা হচ্ছে, অগ্নিকাণ্ড হচ্ছে। দেশে জবাবদিহি না থাকায় সরকারের প্রতিষ্ঠানগুলো ঠিকমতো দায়িত্ব পালন করছে না। তিনি বলেন, ‘আমরা জানি, দুর্ঘটনা হঠাৎ করে হয়। কিন্তু দেশে প্রতিনিয়ত বাস দুর্ঘটনা হচ্ছে, ট্রেন দুর্ঘটনা হচ্ছে। তাই দুর্ঘটনা এখন স্বাভাবিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে।’

মানুষের জানমালের নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব সরকারের উল্লেখ করে জি এম কাদের বলেন, ‘আমাদের যথেষ্ট আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আছে, নিরাপত্তাচৌকি আছে। এত কিছুর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে কীভাবে পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে? ব্যাংক লুট হলো, অপহরণ হলো, থানা আক্রমণ হলো, অস্ত্র লুট হলো। এমন ঘটনা বারবার ঘটছে। সন্ত্রাসীদের এমন কর্মকাণ্ড রুখে দেওয়ার কথা ছিল সরকারের, ব্যাপক প্রস্তুতি থাকার কথা ছিল। সরকার এ ঘটনা সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে। বড় ধরনের কোনো বিপদ হলে আমরা কোথায় গিয়ে দাঁড়াব?’

জি এম কাদের আরও বলেন, ‘দেশে জবাবদিহি থাকে না তখনই, যখন গণতন্ত্র থাকে না, মানুষ সার্বিকভাবে মূল্যায়নের সুযোগ পায় না। ট্যাক্সের টাকা দিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে প্রতিপালন করা হয়। কিন্তু তারা নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। আমরা তাদের কার্যক্রম দেখে স্বস্তিবোধ করতে পারছি না। ফলে যারা পাহাড়ি এলাকায় বিনিয়োগ করতে চায়, ব্যবসা করতে চায়, বেড়াতে যেতে চায়, তারা এখন পিছপা হচ্ছে। এটি দেশের জন্য মঙ্গলজনক নয়। বর্তমানে সন্ত্রাসীরা সহিংস কার্যকলাপে চলে গেছে। এটি সরকারকে দেখতে হবে। তাদের কোনো দাবি মেনে নিলে সেই ফলাফল আমাদের জন্য গ্রহণযোগ্য হবে না।’

জাতীয় পার্টিতে বিভেদ তৈরিতে সরকারের ভূমিকা আছে অভিযোগ করে জি এম কাদের বলেন, ‘জাতীয় পার্টি নিবন্ধিত দল। প্রতিটি নিবন্ধিত দল পরিচালনার জন্য নির্বাচন কমিশন একটি দিকনির্দেশনা দিয়ে থাকে। আমরা সেভাবেই দল পরিচালনা করছি। তবে অনেক দিন ধরে আমাদের অভ্যন্তরীণ বিভেদ সৃষ্টির জন্য সরকার চেষ্টা করে যাচ্ছে। সরকারপন্থী কিছু মিডিয়া ফলাও করে এটি প্রচার করে আমাদের বেকায়দায় ফেলার চেষ্টা করছে। দল অনেকেই করতে পারে। তবে আমাদের নিবন্ধিত লোগো ব্যবহার করে কেউ সভা-সমাবেশ করতে পারে না। সরকার জানে এটি অবৈধ। কিন্তু পদক্ষেপ গ্রহণ করে না।’