বেনজীর বিদেশে পালিয়ে যাবে—কেউ কিছু জানে না, এটাও বিশ্বাস করতে হবে: রিজভী

যশোরে এক অনুষ্ঠানে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘হাজার হাজার কোটি টাকা লুটে নিয়ে বেনজীর বিদেশে পালিয়ে যাবে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী-ওবায়দুল কাদের-পুলিশ কিছুই জানে না, এটাও জনগণকে বিশ্বাস করতে হবে? সরকার আসলে সবই জানে।’

সোমবার বিকেলে যশোর জেলা পরিষদ মিলনায়তনে (বিডি হল) প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৩তম শাহাদাতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী আরও বলেন, বর্তমান সরকার একটা ফ্যাসিস্ট সরকার তৈরি করেছে। ভোটবিহীন এ সরকারের জনগণের ভোট লাগে না। কাজে লাগে বেনজীরকে, কাজে লাগে আজিজদের। সরকারের লোকজন আবার জিয়াউর রহমানের পরিবার নিয়ে কটূক্তি করেন। অবশ্য তাতে বিএনপি বা জিয়া পরিবারের কিছু যায়–আসে না।

বিএনপির নেতা-কর্মীদের পুলিশি হয়রানির চিত্র তুলে ধরে বিএনপি নেতা রিজভী বলেন, বিএনপি ন্যায় দাবি আদায়ে আন্দোলনের ডাক দিলে কলা-কচুখেত আর বাঁশবাগান থেকে খুঁজে নেতা-কর্মীদের ধরে নিয়ে আসে পুলিশ। বেনজীরকে দিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করেছে এই সরকার। এই বেনজীরকে দিয়ে সরকার বিরোধী দলকে দমন, রাতের ভোট ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো কাজ করেছে। হঠাৎ বেনজীরের দুর্নীতির আমলনামা ফুটে উঠল কেন? এর কারণ সরকার আর বেনজীরের মধ্যে ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে গন্ডগোল হয়েছে।

দেশে উন্নয়নের নামে গল্প শোনানো হয় মন্তব্য করে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব বলেন, আসলে উন্নয়ন এই দেশের খেটে খাওয়া মানুষের হয়নি। দেশে মোটা চালের দাম বাড়লেও চিকন চালের দাম বাড়ে না। এর কারণ চিকন চাল ধনীদের খাবার। মোটা চাল গরিবের খাবার। এই সরকার ধনীদের উন্নতি করছে। উন্নতি করছেন আমলাদের, দুর্নীতিবাজদের। উন্নয়ন করেছে জেনারেল আজিজদের, উন্নয়ন করছে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের, সংসদ সদস্য-মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের ঠিকাদার আর ব্যবসায়ীদের। এই সরকার খেটে খাওয়া গরিব মানুষের কোনো উন্নয়ন করেনি।

দেশের লুটপাটের লঙ্কাকাণ্ড হচ্ছে মন্তব্য করে রিজভী বলেন, উন্নয়নের নামে হরিলুটের লঙ্কাকাণ্ড হচ্ছে। এই দেশের জনগণের সামগ্রিক উন্নয়ন হচ্ছে না। দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বেকার আছে বাংলাদেশে। সরকার যে ১৫ বছরে এত উন্নয়নের কথা বলে, তাহলে এত বেকার হচ্ছে কেন? উন্নয়ন হলে তো মানব উন্নয়ন হবে। শিক্ষিত তরুণেরা চাকরি পাবেন। এটাই তো উন্নয়নের নমুনা। আজ দেশে উচ্চশিক্ষিত ছেলেরা রিকশা চালাচ্ছেন। এটা কিসের আলামত? এটা গণতন্ত্রহীন সমাজব্যবস্থার আলামত।

জেলা বিএনপির আহ্বায়ক নার্গিস বেগম এতে সভাপতিত্ব করেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম, স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক মো. রফিকুল ইসলাম, সহসাংগঠনিক সম্পাদক (খুলনা বিভাগ) জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, সহধর্ম–বিষয়ক সম্পাদক অমলেন্দু দাস অপু, সহস্বাস্থ্য–বিষয়ক সম্পাদক জাহানারা সিদ্দিকী, সাবেক দপ্তর সম্পাদক মফিকুল হাসান, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সৈয়দ সাবেরুল হক, আবুল হোসেন, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন।