যশোর-৪ আসনের (অভয়নগর, বাঘারপাড়া ও সদরের একাংশ) বর্তমান সংসদ সদস্য ও স্বতন্ত্র প্রার্থী রণজিত কুমার রায় নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন বলে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে। এই আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এনামুল হকের (বাবুল) প্রার্থিতা বহালে আপিল বিভাগের আদেশের পর নির্বাচনী এলাকায় এ গুঞ্জন ছড়ায়।
এ বিষয়ে রণজিত কুমার রায়ের কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি পাওয়া যায়নি। চেষ্টা করেও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে রণজিত কুমার রায়ের ব্যক্তিগত সহকারী তপন বিশ্বাস তাঁর ফেসবুক আইডিতে নির্বাচন থেকে রণজিত কুমার রায়ের সরে দাঁড়ানোর বিষয়ে একটি পোস্ট দিয়েছেন। সেখানে তিনি উল্লেখ করেছেন, ‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার প্রার্থীকে সমর্থন দিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী থেকে সরে দাঁড়ালেন যশোর-৪ এর বর্তমান এমপি রণজিত কুমার রায়।’
রিটার্নিং কর্মকর্তা কর্তৃক মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণার পর আওয়ামী লীগের প্রার্থী এনামুল হকের বিরুদ্ধে ঋণখেলাপির অভিযোগ তুলে তাঁর মনোনয়নপত্র বাতিলের জন্য নির্বাচন কমিশনে (ইসি) আবেদন করেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের প্রার্থী সুকৃতি কুমার মণ্ডল ও স্বতন্ত্র প্রার্থী রণজিত কুমার রায়। শুনানি শেষে ১৩ ডিসেম্বর এনামুল হকের মনোনয়নপত্র বাতিল করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এই সিদ্ধান্তের বৈধতা নিয়ে ও প্রার্থিতা ফিরে পেতে এনামুল হক ১৭ ডিসেম্বর হাইকোর্টে রিট করেন। শুনানি নিয়ে ১৮ ডিসেম্বর হাইকোর্ট রিটটি সরাসরি খারিজ করে দেন।
হাইকোর্টের ওই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করেন এনামুল হক। এর ওপর ১৯ ডিসেম্বর চেম্বার আদালতে শুনানি হয়। শুনানি নিয়ে সেদিন চেম্বার আদালত এনামুল হকের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করে রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্ত বহাল রাখেন। তাঁর প্রার্থিতা বাতিল করে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সিদ্ধান্ত এবং রিট খারিজ করে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ স্থগিত করা হয়। ফলে এনামুল হকের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার পথ খোলে।
১৯ ডিসেম্বরের আদেশ প্রত্যাহার চেয়ে ওই দুই প্রার্থী আবেদন করেন। অন্যদিকে রিট খারিজ করে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশের বিরুদ্ধে এনামুল হক লিভ টু আপিল করেন। আজ মঙ্গলবার এই লিভ টু আপিল এবং চেম্বার আদালতের আদেশ প্রত্যাহার চেয়ে অপর দুই প্রার্থীর করা আবেদন একসঙ্গে শুনানির জন্য ওঠে। এনামুল হকের প্রার্থিতা বহালে চেম্বার আদালতের দেওয়া আদেশ বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ।
যশোর-৪ আসনে ২০০৮,২০১৪ এবং ২০১৮ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন রণজিত কুমার রায়। এবারও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন রণজিত। দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। তাঁর প্রতীক ঈগল। আর আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পান অভয়নগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এনামুল হক।
নির্বাচনে প্রচারণা শুরু হওয়ার পর থেকে নৌকার প্রার্থীসহ অন্য প্রার্থীদের প্রচার প্রচারণা, গণসংযোগ অব্যাহত থাকলেও সংসদ সদস্য স্বতন্ত্র প্রার্থী রণজিত কুমারের পক্ষে কোথাও কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি। এমনকি তাঁর ঘনিষ্ঠজনেরাও এ বিষয়ে কোনো কিছু বলতে পারেননি। গোটা নির্বাচনী এলাকা তাঁর কোনো প্রচারণা দেখা যায়নি। চোখে পড়েনি ঈগল প্রতীকের কোনো পোস্টার।