নাটোরে কৃষিজমিতে পুকুর কাটতে যাওয়ায় এক্সকাভেটরে আগুন, থানায় অভিযোগ

আগুনে পুড়তে থাকা এক্সকাভেটর। গত সোমবার রাতে নাটোরের লালপুর উপজেলার শিবনগর গ্রামে
ছবি: সংগৃহীত

নাটোরের লালপুরের শিবনগর গ্রামে বাধা দেওয়ার পরও কৃষিজমিতে পুকুর কাটতে শুরু করায় বিক্ষুব্ধ লোকজন এক্সকাভেটর আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এ ঘটনায় গতকাল মঙ্গলবার গ্রামের বাসিন্দাদের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন পুকুরমালিক উজ্জ্বল হোসেন। গ্রেপ্তার আতঙ্কে গ্রামের পুরুষ সদস্যরা গা ঢাকা দিয়েছেন। গ্রামে এখন থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

এ বিষয়ে লালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. উজ্জ্বল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, জমির মালিক এক্সকাভেটর পুড়িয়ে দেওয়ার লিখিত অভিযোগ থানায় দিয়েছেন। অভিযোগ তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে অহেতুক কাউকে হয়রানি করা হবে না।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উজ্জ্বল হোসেন এলাকায় একটি পুকুর কাটার উদ্যোগ নেন। গ্রামের লোকজন তাঁকে পুকুর কাটতে বাধা দেন এবং থানার ওসির সঙ্গে দেখা করে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দেন। একই সঙ্গে এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মুঠোফোনে (ইউএনও) খুদে বার্তা পাঠান।

এরপরও গত সোমবার পুকুর কাটার জন্য জমিতে এক্সকাভেটর নামান তিনি। এরপর মসজিদের মাইকে গ্রামের লোকজনকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানানো হয়। একপর্যায়ে রাতে এক্সকাভেটর আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেন বিক্ষুব্ধ লোকজন।

এ ঘটনায় উজ্জ্বল হোসেন বাদী হয়ে গ্রামের বাসিন্দাদের বিরুদ্ধে গতকাল থানায় লিখিত অভিযোগ জমা দেন। এরপর গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে গ্রেপ্তার আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

জমির মালিক উজ্জ্বল হোসেন প্রথম আলো বলেন, ‘আমার জমিতে আমি পুকুর কাটছি। এতে এলাকার লোকজনের কী আসে যায়? তাঁরা গায়ের জোরে আমাকে পুকুর কাটতে দিচ্ছে না। আমার মেশিন পোড়ায়ে দিছে।’

তবে শিবনগর গ্রামের কৃষক জাফর আহমেদ এক্সকাভেটর পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘এর আগে পুকুর কাটার কারণে আমাদের জমিতে পানি জমে থাকে। পুকুরমালিকদের ব্যক্তিগত লাভের কারণে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি।’

এক্সকাভেটর পোড়ানোর ঘটনায় থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে বলে শুনেছেন জানিয়ে লালপুরের ইউএনও শামীমা সুলতানা প্রথম আলোকে বলেন, ‘অবৈধভাবে কাউকে পুকুর খনন করতে দেওয়া হবে না। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’