সিলেটে জোড়া খুনের মামলায় তিনজনের মৃত্যুদণ্ড, দুজনের যাবজ্জীবন
সিলেটে সাড়ে সাত বছর আগের জোড়া খুনের এক মামলায় তিন আসামির মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি আরও দুই আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় দেওয়া হয়েছে। রোববার দুপুরে সিলেটের অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক নূরে আলম ভূঁইয়া এ রায় দেন।
রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেট মহানগর দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি জুবায়ের বখত। রায়ে সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানার আদেশও দেওয়া হয়েছে।
মৃত্যুদণ্ডের সাজা পাওয়া ব্যক্তিরা হলেন সিলেটের দক্ষিণ সুরমার গোলাবাজার ইউনিয়নের নয়াগাঁও চারমাইল এলাকার শিপন আহমদ, হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার কসবা এলাকার দুলাল মিয়া এবং গোয়াবাড়ি এলাকার উজ্জ্বল মিয়া। যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন সিলেট নগরের কানিশাইল এলাকার নজরুল ইসলাম এবং গোলাপগঞ্জের পূর্ব ফুলসাইন্দ বারজানটিলার শাকিল আহমেদ। রায় ঘোষণার সময় দণ্ডপ্রাপ্ত পাঁচ আসামির মধ্যে চারজন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি শিপন আহমদ পলাতক রয়েছেন।
মামলার সংক্ষিপ্ত সূত্রে জানা যায়, সিলেটের খাদিমনগর বিসিক শিল্পনগরী এলাকায় মিষ্টিজাত ও বেকারি খাদ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান বনফুলের কারখানায় কাজ করতেন চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ দরদাহের মো. রাজু আহমদ ও শরীয়তপুরের এস এম তাপু মিয়া। ২০১৬ সালের ৮ জানুয়ারি সন্ধ্যায় খাদিমনগরের কারখানা থেকে বাসায় যাওয়ার পথে তাঁদের ওপর হামলা হয়। এ সময় তাঁদের আরেক সহকর্মী দক্ষিণ সুরমার বাসিন্দা রাসেল আহমদও আহত হন। পরে স্থানীয় লোকজন তাঁদের উদ্ধার করে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রাজু আহমদ ও তাপু মিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় নিহত রাজু আহমদের ভাই মাসুদ পারভেজ বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সিলেটে শাহপরান থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। ২০১৭ সালের ১০ এপ্রিল ৫ জন আসামিকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা। দীর্ঘ বিচারপ্রক্রিয়া ও সাক্ষ্যপ্রমাণ উপস্থাপনের পর রোববার মামলার রায় দেন আদালতের বিচারক।
পুলিশের তদন্তে জানা যায়, রাসেল আহমদের সঙ্গে আসামিদের পূর্ববিরোধ ছিল। ঘটনার দিন রাজু, তাপু ও রাসেল একসঙ্গে কারখানা থেকে ফিরছিলেন। রাসেলের ওপর হামলা করতে গেলে রাজু ও তাপু প্রতিরোধ করেন। এ সময় ছুরিকাঘাতে তিনজনই আহত হন।