রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বাকি দিয়ে বন্ধ হয়ে যাওয়া মানিক হোসেন ওরফে বাবু ভাই আবার খাবার হোটেল খুলেছেন। হোটেল খোলার পর সাত দিন পার হয়েছে। এই সময়ে ওই দোকান থেকে কেউ বাকি খাননি। এর মধ্যে অনেক শিক্ষার্থী তাঁদের বকেয়া পরিশোধও করেছেন। তবে মানিকের দাবি, তাঁর আড়াই লাখ টাকা বাকির মধ্যে এখন পর্যন্ত সব মিলিয়ে ২০ হাজার টাকা উঠেছে।
এর আগে বাকির কারণে ২৪ দিন বন্ধ থাকার পর ১৫ জানুয়ারি দুজনের আর্থিক সহযোগিতা পেয়ে এবং পত্রিকায় খবর প্রকাশিত হওয়ার পর মানিক হোটেলটি চালু করেন। বাকি দেওয়ার কারণে তহবিল শূন্য হয়ে যাওয়ায় গত ২২ ডিসেম্বর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাবু হোটেল বন্ধ করে দেওয়া হয়। এ নিয়ে প্রথম আলোয় একাধিক খবর প্রকাশিত হয়। এরপর মানিক হোসেনকে ২৫ হাজার টাকা পাঠান আমেরিকাপ্রবাসী ও রেলের একজন কর্মকর্তা। এদিকে পত্রপত্রিকায় খবর প্রকাশিত হওয়ার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাকি খাওয়া শিক্ষার্থীরাও কিছু টাকা পরিশোধ করেছেন। তাঁদের মধ্যে সর্বোচ্চ সাড়ে সাত হাজার টাকা পরিশোধ করেছেন এক ছাত্রলীগ নেতা। এই টাকা পাওয়ার পর খাবার হোটেল চালু করেন মানিক।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ জিয়াউর রহমান হলের সামনে মানিক হোসেনের হোটেল। ক্যাম্পাসে তিনি ‘বাবু ভাই’ হিসেবে পরিচিত। তিনি ওই এলাকায় ২০০০ সাল থেকে এটি পরিচালনা করছেন।
আজ বিকেলে মানিক প্রথম আলোকে বলেন, ধীরে ধীরে দোকানে ক্রেতা বাড়ছে। অনেকেই জানেই না যে খাবার হোটেল খোলা হয়েছে। তিনি খাবারের মান বাড়িয়েছেন। মাছ ও মাংসের দাম আগের তুলনায় কিছু কমিয়েছেন। তবে গত এক সপ্তাহে আগের মতো কেউ খেয়ে টাকা না দিয়ে চলে যাননি। সবাই খাওয়ার পর টাকা দিয়েছেন। অনেকেই আর্থিক খোঁজখবরও নিয়েছেন। অনেকে বাকি বন্ধ করতে পরামর্শ দিয়েছেন।
মানিকের দাবি অনুযায়ী, শুধু করোনার প্রকোপ কমার পর ক্যাম্পাস খুললে মানিকের কাছে ১০০-এর বেশি শিক্ষার্থী বাকি খেয়েছেন। তাঁদের কাছে বাকি পড়েছে আড়াই লাখ টাকা। এসব শিক্ষার্থীর কাছ থেকে সর্বোচ্চ ২৮ হাজার থেকে সর্বনিম্ন ৫০০ টাকা পর্যন্ত তিনি পাবেন। তাঁদের বেশির ভাগই ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।
মানিক বলেন, সাত দিনে এমন কয়েকজন শিক্ষার্থীও খেতে এসেছেন, যাঁদের কাছে তাঁর টাকা পাওনা আছে। তবে নতুন করে খাওয়ার পর তাঁদের আর টাকার কথা বলতে হয়নি। তাঁরা খাওয়ার পর নগদ টাকা পরিশোধ করেছেন। ছাত্রলীগের নেতারাও খেয়ে টাকা দিচ্ছেন। তবে বাকি রাখা শিক্ষার্থীরা বরাবরের মতো এখনো আশ্বাস দিয়ে যাচ্ছেন যে এই মাসের মধ্যে তাঁরা বাকি টাকা পরিশোধ করবেন। তিনিও সেই আশাতেই আছেন।