নড়াইলে সাংবাদিককে কুপিয়ে জখমের ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবি
নড়াইলে সাংবাদিক সৈয়দ সজিবুর রহমানকে কুপিয়ে জখমের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন হয়েছে। আজ বুধবার দুপুরে নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ের সামনে ও প্রেসক্লাব যশোর কার্যালয়ের সামনের সড়কে এই কর্মসূচি পালিত হয়। পৃথক দুটি স্থানে এই মানববন্ধনে স্থানীয় সাংবাদিকেরা অংশ নেন।
লোহাগড়ায় ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধনে বক্তব্য দেন সাংবাদিক রূপক মুখার্জি, খায়রুল ইসলাম, শাহাজাহান সাজু, বিপ্লব রহমান প্রমুখ। এ সময় রূপক মুখার্জি বলেন, ‘সাংবাদিক সজীবের ওপর সন্ত্রাসী হামলা আমরা মেনে নিতে পারছি না। আমরা আর কোনো সাংবাদিক অনিরাপদভাবে জীবন যাপন করতে চাই না। আমরা নিরাপত্তা চাই। সরকারের কাছে দাবি, দ্রুত সজিবুর রহমানের ওপর হামলাকারীদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনা হোক।’
বিপ্লব রহমান বলেন, সজিবুরকে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। ঘটনার দুই দিন পার হলেও এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যদি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় না আনা হয়, তবে তাঁরা বড় আকারে আন্দোলনের ডাক দেবেন।
এদিকে কুপিয়ে জখমের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে শাস্তির দাবিতে আজ দুপুরে প্রেসক্লাব যশোর কার্যালয়ের সামনের সড়কে মানববন্ধন করেন স্থানীয় সাংবাদিকেরা। ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধনে সাংবাদিক নেতারা বলেন, সত্য প্রকাশের কারণে সাংবাদিকেরা হামলার শিকার হবেন, এটা কাম্য নয়। দেশে অসংখ্য সাংবাদিক হামলা ও নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। সজীবও সাংবাদিকতার কারণে হামলার শিকার হয়েছেন। যাঁরা এ হামলার সঙ্গে জড়িত, তাঁদের গ্রেপ্তার করে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন প্রেসক্লাব যশোর কার্যালয়ের সভাপতি জাহিদ হাসান, সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুর রহমান, দৈনিক সমাজের কথার সম্পাদক আমিনুর রহমান, প্রাচ্য সংঘ যশোরের প্রতিষ্ঠাতা ও সাংবাদিক বেনজীন খান, যশোর সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মনতোষ বসু, সাংবাদিক ইউনিয়ন যশোরের সভাপতি মো. আকরামুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক এস এম ফরহাদ, বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন যশোরের সভাপতি গোপীনাথ দাস প্রমুখ।
সজিবুর রহমান সময় টেলিভিশনের নড়াইল জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত। তাঁর গ্রামের বাড়ি লোহাগড়া উপজেলার যোগিয়া গ্রামে এবং বর্তমানে নড়াইল শহরের আলাদাতপুরে বাস করেন। গত সোমবার মধ্যরাতে নড়াইল শহরের শেখ রাসেল সেতুর ওপর তাঁকে কুপিয়ে জখম করে দুর্বৃত্তরা। রাত সাড়ে ১১টার দিকে শহরের শেখ রাসেল সেতুতে আড্ডা দিচ্ছিলেন স্থানীয় দুই শিক্ষার্থী। এ সময় সেখানে একটি মোটরসাইকেলে দুই ব্যক্তি গিয়ে নিজেদের প্রশাসনের লোক পরিচয় দেন। তাঁরা শিক্ষার্থীদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন এবং তাঁদের মোটরসাইকেলের কাগজপত্র দেখতে চান।
একপর্যায়ে বিষয়টি নিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডায় জড়ান তাঁরা। বিষয়টি দেখে সজিবুর মোটরসাইকেল থামিয়ে ওই দুই ব্যক্তির পরিচয় জানতে চান। তখন সজিবুরের সঙ্গেও বাগ্বিতণ্ডায় জড়ান তাঁরা। একপর্যায়ে তাঁরা ব্যাগ থেকে ছুরি বের করে সজিবুরের বুকে, হাতে ও পায়ে কয়েকটি আঘাত করে পালিয়ে যান।
নড়াইল সদর থানা–পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনায় এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, সাংবাদিককে ছুরিকাঘাতে জড়িত ব্যক্তিরা ছিনতাইকারী ছিল। ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।