রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে পৌঁছাল ইউরেনিয়ামের তৃতীয় চালান

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র
ছবি: প্রথম আলো

পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার রূপপুরে নির্মাণাধীন পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের জ্বালানি ‘ফ্রেস নিউক্লিয়ার ফুয়েল’ বা ইউরেনিয়ামের তৃতীয় চালান প্রকল্প এলাকায় পৌঁছেছে। বিশেষ নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে আজ শুক্রবার সকাল সোয়া ১০টার দিকে ইউরেনিয়ামবাহী গাড়িবহর রূপপুরে পৌঁছায়।

পাবনার পুলিশ সুপার আকবর আলী মুন্সি বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করে বলেন, প্রথম ও দ্বিতীয় চালানের মতো কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে নাটোর-কুষ্টিয়া-পাবনা মহাসড়ক দিয়ে ইউরেনিয়ামবাহী তৃতীয় চালানের গাড়িবহর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভেতরে প্রবেশ করেছে।

আরও পড়ুন

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ইউরেনিয়াম বহনকারী গাড়িগুলো আসার সময় মহাসড়কে সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিশেষ নিরাপত্তা বলয় ছিল। নিরাপত্তার জন্য ভোর ৫টা থেকে সকাল সাড়ে ১০ পর্যন্ত পাবনা-নাটোর-কুষ্টিয়া মহাসড়কে বড় যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়। ইউরেনিয়াম পৌঁছানোর পর যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের পরিচালক শৌকত আকবর প্রথম আলোকে বলেন, রাশিয়া থেকে বিশেষ বিমানে ইউরেনিয়ামের তৃতীয় চালান ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়। প্রথম ও দ্বিতীয় চালানের মতো সর্বোচ্চ নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে সড়কপথে রূপপুরে নেওয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রমে আরও চারটি চালান দেশে আসবে।

আরও পড়ুন

এর আগে গত ২৯ সেপ্টেম্বর প্রকল্পের প্রথম ইউনিটের জ্বালানি ইউরেনিয়ামের প্রথম চালান রূপপুরে পৌঁছায়। ৫ অক্টোবর চালানটি প্রকল্প কর্তৃপক্ষের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হয়। ওই অনুষ্ঠানে ভার্চ্যুয়াল যুক্ত ছিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ঐতিহাসিক এই ঘটনার মধ্য দিয়ে ইউরেনিয়াম জ্বালানির যুগে প্রবেশ করে বাংলাদেশ। এতে বিশ্বের ৩৩তম পারমাণবিক শক্তি ব্যবহারকারী দেশের মর্যাদা অর্জন করে বাংলাদেশ।

দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় একক প্রকল্প রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে প্রায় ১ লাখ ১৪ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকার দিচ্ছে ২২ হাজার ৫২ কোটি ৯১ লাখ ২৭ হাজার টাকা। রাশিয়া থেকে ঋণসহায়তা হিসেবে আসছে ৯১ হাজার ৪০ কোটি টাকা।

আরও পড়ুন

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের দুটি ইউনিটের উৎপাদনের সক্ষমতা ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট। প্রকল্পের নির্মাণকাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। বিদ্যুৎকেন্দ্র কর্তৃপক্ষ আগামী বছর প্রথম ইউনিট থেকে জাতীয় গ্রিডে পরীক্ষামূলক বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে চায়। একই বছর বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করার আশা করছে তারা।