‘মা–বাবার কবর জিয়ারত করতে গিয়েছিল, মানুষটাকে তারা মেরে ফেলল’

নিহত মোহাম্মদ মুসাছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামের রাউজানে রাজনৈতিক বিরোধের জেরে ওমানপ্রবাসী বিএনপির এক কর্মীকে মারধর করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। তাঁর নাম মোহাম্মদ মুসা (৪৫)। তাঁর বাড়ি রাউজান পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের হাজিপাড়া গ্রামে। আজ শুক্রবার জুমার নামাজের পর হাজিপাড়া মসজিদ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত মুসা দুই মাস আগে দেশে আসেন। তাঁর ১০ বছর এবং ৫ বছর বয়সী দুটি সন্তান রয়েছে। মুসার স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে হাটহাজারীর মদনহাট এলাকায় বাবার বাড়ির পাশে একটি ভাড়া বাসায় থাকেন।

নিহত মুসার স্বজন, স্থানীয় বাসিন্দা ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দেশে এসে হাটহাজারীর বাসাটিতে ওঠেন মুসা। মা–বাবার কবর জিয়ারতের উদ্দেশ্যে আজ দুপুরে তিনি নিজ গ্রামের মসজিদে জুমার নামাজ পড়তে যান। নামাজ শেষে কবর জিয়ারত করতে যাওয়ার সময় দুজন যুবক তাঁকে টেনেহিঁচড়ে মসজিদের পার্শ্ববর্তী শৌচাগারের কাছে নিয়ে গিয়ে মারধর শুরু করেন। পরে আরও এক যুবক মারধরে যোগ দেন। একপর্যায়ে মুসা মাটিয়ে লুটিয়ে পড়লে মারধরকারীরা পালিয়ে যান। পরে এলাকার লোকজন মুসাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

মুসার স্ত্রীর বড় ভাই ওমর ফারুকের সঙ্গে আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কথা হয়। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, মুসা বিএনপির কর্মী ছিলেন। রাজনৈতিক কারণে তাঁর সঙ্গে এলাকার সরকারদলীয় লোকজনের মতবিরোধ ছিল। দেশে এলেই এসব বিষয়ে তাঁদের সঙ্গে ঝগড়াবিবাদ হতো। রাজনৈতিক বিরোধের জেরেই মুসাকে কিল-ঘুষি মেরে হত্যা করা হয়েছে।

মুসার স্ত্রী ফেরদৌস আকতার বলেন, ‘মা–বাবার কবর জিয়ারত করতে গিয়েছিল, মানুষটাকে তারা মেরে ফেলল। আমি দুই শিশুসন্তান নিয়ে এখন কোথায় যাব। একজন মানুষকে এভাবে মসজিদের সামনে পিটিয়ে মেরে ফেলা যায়? আমি এই হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।’

রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহেদ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, নিহত ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করলে আসামিদের শনাক্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।