ছয় বিভাগীয় সমাবেশ ঘুরে আবদুর রহমান এখন সিলেটে

আবদুর রহমান
ছবি: প্রথম আলো

দেশের ছয়টি স্থানে এখন পর্যন্ত বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর মধ্যে সব কটি সমাবেশেই যোগ দিয়েছেন বলে দাবি করেছেন আবদুর রহমান ওরফে আজাদ। ৪৩ বছর বয়সী আবদুর রহমানের বাড়ি নেত্রকোনার খালিয়াজুরি উপজেলায়। সিলেটের সমাবেশে যোগ দিতে গত বুধবার রাতে তিনি সিলেটে শহরে পৌঁছান। প্রথম দিন এক আত্মীয়ের বাসায় থাকলেও গতকাল বৃহস্পতিবার রাত থেকে আবদুর রহমান সমাবেশস্থলে থাকছেন। সেখানেই খাওয়াদাওয়া করছেন। সমাবেশ শেষে আগামীকাল শনিবার বিকেলে তাঁর বাড়িতে রওনা দেওয়ার কথা।

আজ শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সিলেট সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে আবদুর রহমানের সঙ্গে কথা হয়। এই মাঠেই কাল বিএনপির সিলেট বিভাগীয় গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। তিনি এই প্রতিবেদকের কাছে দাবি করেন আগের ছয়টি সমাবেশে তিনি যোগ দিয়েছেন। জ্বালানি তেলসহ নিত্যপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি, নেতা-কর্মীদের হত্যার প্রতিবাদে ও দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীন সংসদ নির্বাচনের দাবিতে বিএনপি বিভাগীয় শহরে ধারাবাহিকভাবে এ গণসমাবেশ করছে।

বিএনপির প্রথম গণসমাবেশ হয় গত ১২ অক্টোবর চট্টগ্রামে। এরপর ময়মনসিংহ, খুলনা, রংপুর, বরিশাল ও ফরিদপুরে (বিএনপির সাংগঠনিক বিভাগ) গণসমাবেশ করেছে বিএনপি। এর মধ্যে ময়মনসিংহ ছাড়া বাকি সব স্থানে সমাবেশের আগের দিন বাসসহ অন্যান্য গণপরিবহনে ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়। একইভাবে সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জে আজ থেকে ৪৮ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘট শুরু হয়েছে। অন্যদিকে সিলেট জেলায় কাল সকাল-সন্ধ্যা ধর্মঘট পালিত হবে।

ধর্মঘটের আশঙ্কায় খালিয়াজুরির আবদুর রহমান বুধবারই সিলেটে পৌঁছান। তিনি খালিয়াজুরি উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়কের দায়িত্বে আছেন। আবদুর রহমান বলেন, সিলেট বিভাগীয় গণসমাবেশে নেত্রকোনার খালিয়াজুরি, মদন ও মোহনগঞ্জ উপজেলা থেকে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের অন্তত চার হাজার নেতা-কর্মী এরই মধ্যে সিলেটে এসেছেন। তাঁরা সমাবেশস্থল, কমিউনিটি সেন্টার, আবাসিক হোটেল ও স্বজনদের বাসায় থাকছেন। সমাবেশে তাঁরা একটা ক্যাম্প করেছেন। এখানে তাঁদের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের মুক্তি চেয়ে ব্যানার, ফেস্টুনও সাঁটিয়েছেন।

বিএনপির অন্য নেতা-কর্মীদের সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছেন আবদুর রহমান
ছবি: প্রথম আলো

গতকাল রাতে সমাবেশস্থলে তাঁর এলাকার বিভিন্ন নেতা-কর্মীদের সঙ্গে রাত কাটিয়েছেন আবদুর রহমান। গতকাল সমাবেশের মাঠে ডেকচিতে রান্নাবান্না করে কর্মীদের নিয়ে খেয়েছেন। সকাল বেলা নাশতাও সেরেছেন একসঙ্গে। আজ রাতে মাঠেই থাকবেন। কর্মীদের সঙ্গে স্লোগান, মিছিল ও গল্পগুজব করে পুরো রাত কাটিয়ে দেবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন।

সিলেটের পর অন্য দুটি বিভাগীয় সমাবেশেও যোগ দেওয়ার ইচ্ছা আছে আবদুর রহমানের। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘জিনিসপত্রের দাম হু হু করে বাড়ছে। মানুষ ঠিকমতো খেতে পারছে না। চারদিকে অভাব আর অভাব। এ অবস্থা থেকে সাধারণ মানুষ মুক্তি চায়। বিএনপি এখন মানুষের মুক্তির আন্দোলন শুরু করেছে। এই তাগিদ থেকেই দেশের সব কটি বিভাগীয় গণসমাবেশে যাচ্ছি। ঢাকায় ১০ ডিসেম্বরের গণসমাবেশেও যাব।’