গণসংযোগে ব্যস্ত প্রার্থীরা, ব্যানারে-পোস্টারে ছেয়ে গেছে নগরী

সিলেটে প্রার্থীদের ব্যানার-পোস্টারে ছেয়ে গেছে নগরী। রোববার সকালে সিটি করপোরেশনের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের হাউজিং এস্টেট এলাকায়
ছবি: প্রথম আলো

সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জমজমাট প্রচারণায় মুখর নগরী। ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন প্রার্থীরা। সকাল থেকে দিনভর গণসংযোগে ব্যস্ত থাকছেন তাঁরা। ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে করছেন মতবিনিময় ও উঠান বৈঠক।

এদিকে নগরের ৪২টি ওয়ার্ডের রাস্তাঘাট ও অলিগলি ছেয়ে গেছে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের ব্যানার ও পোস্টারে। পাড়া-মহল্লায় তাঁদের সমর্থনে চলছে মাইকিং।

রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানিয়েছে, ২১ জুন ইভিএমে সিলেট সিটির ভোট অনুষ্ঠিত হবে। মোট ভোটার ৪ লাখ ৮৬ হাজার ৬০৫ জন। নির্বাচনে মেয়র পদে ৭ জন, কাউন্সিলর পদে ২৭৩ জন ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৮৭ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

রোববার দুপুর ১২টায় আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী কাজলশাহ এলাকার ইসকন মন্দিরে মতবিনিময় করেন। এরপর তিনি কাজলশাহ ও শিববাড়ী এলাকায় গণসংযোগ করেন। এ সময় তিনি ও তাঁর সমর্থকেরা ভোটারদের মধ্যে প্রচারপত্র বিলি করেন।

সিলেট নগরের কাজলশাহ এলাকার ইসকন মন্দিরে ‘স্নানযাত্রা উৎসব’ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধরী। রোববার দুপুরে
ছবি: প্রথম আলো

শিববাড়ী এলাকায় গণসংযোগের সময় আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, শুধু উন্নয়ন করলেই হবে না। পরিকল্পিত ও টেকসই উন্নয়নের প্রয়োজন। সিলেটে স্থায়ী বা দৃশ্যমান কোনো উন্নয়ন চোখে পড়ে না। তাই সিলেটকে একটি আধুনিক ও স্মার্ট নগর হিসেবে গড়ে তুলতে সুপরিকল্পিতভাবে কাজ করতে হবে।

এ সময় কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন ও সুজিত রায় নন্দী, জেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মোবাশ্বীর আলী, শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক বুরহান উদ্দিন, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক মিসবাউর রহমান, মহানগর আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক রজতকান্তি গুপ্ত প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী মেন্দিবাগ জালালাবাদ গ্যাস অডিটরিয়ামে সিলেটে কর্মরত উন্নয়নকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময়, মেজর টিলা এলাকায় নির্বাচনী কার্যালয় উদ্বোধন, সুবিদবাজার এলাকায় পশ্চিমাঞ্চলের সব সেন্টার কমিটির সঙ্গে মতবিনিময় এবং মির্জাজাঙ্গাল এলাকায় ময়মনসিংহ সমিতির সঙ্গে মতবিনিময়সহ বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নেন।

দুপুর ১২টার দিকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী মো. নজরুল ইসলাম বাবুল নগরের কালীঘাট এলাকায় গণসংযোগ করেছেন। এ সময় তিনি স্থানীয় চালবাজার এলাকায় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলেন।

পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমাকে ভয় দেখানো হচ্ছে। আমার নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা-হয়রানি চলছে। এর বিচার আল্লাহর কাছে দিয়ে রেখেছি। জনগণের কাছেও বিচার দিয়ে রাখলাম।’

গণসংযোগের সময় নজরুল ইসলামের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা আবদুল্লাহ সিদ্দিকী, কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিলেট জেলার সদস্যসচিব সাইফুদ্দিন খালেদ, মহানগর শাখার সদস্যসচিব আবদুস শহিদ লস্করসহ দল ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতারা।

কালীঘাট এলাকায় জনসংযোগের সময় নজরুল ইসলাম বলেন, ‘ব্যবসায়ীদের পেছনে রেখে কোনো উন্নয়ন করা সম্ভব নয়। ব্যবসায়ীদের সুযোগ-সুবিধা বাড়িয়ে ব্যবসাবান্ধব নগর তুলতে কাজ করব সব সময়। নির্বাচিত হলে সিলেটকে আদর্শে নগরে পরিণত করতে কাজ করব।’

গণসংযোগ করছেন ইসলামী আন্দোলনের মেয়র প্রার্থী মাহমুদুল হাসান। রোববার বেলা দেড়টার দিকে নগরের সোনারপাড়া এলাকায়
ছবি: প্রথম আলো

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মাহমুদুল হাসানও রোববার প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করেছেন। সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত তিনি নগরের ৪ ও ৫ নম্বর ওয়ার্ডে গণসংযোগ করেন।

এ সময় মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘সিলেটের উন্নয়নের জন্য মাঠে কাজ করছি। নির্বাচিত হলে সবার পরামর্শ নিয়ে সিলেটের উন্নয়নে কাজ করব। প্রথমে দুর্নীতি নির্মূল করব। কোনো দুর্নীতিবাজকে কোথাও স্থান দেওয়া হবে না। বরাদ্দের শতভাগ কাজ শেষ করে নজরকাড়া উন্নয়ন করা হবে।’

বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী একাধিক পথসভা ও উঠান বৈঠকে যোগ দেন। এ সময় তিনি নয়াবাজার, টিলারগাঁও, তেমুখী পয়েন্ট, বিশ্ববিদ্যালয় গেট, নাজিরগাঁও, টুকেরবাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করেন এবং ভোটারদের হাতপাখা প্রতীকে ভোট দেওয়ার অনুরোধ জানান।