সার বরাদ্দ ও কমিশন বৃদ্ধির দাবিতে সার ব্যবসায়ীদের স্মারকলিপি

নীলফামারীতে সার ব্যবসায়ীরা কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর দেওয়া স্বারকলিপি তুলে দেন জেলা প্রশাসকের হাতে। আজ সোমবার দুপুরে
ছবি: প্রথম আলো

রাসায়নিক সারের চাহিদা অনুযায়ী বরাদ্দ ও পরিবেশকদের কমিশন বৃদ্ধির দাবিতে নীলফামারীতে স্মারকলিপি দিয়েছেন সার ব্যবসায়ীরা। আজ সোমবার দুপুরে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর দেওয়া ওই স্মারকলিপি জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীনের হাতে তুলে দেওয়া হয়। ব্যবসায়ীদের দাবি, জেলায় ২০২২-২৩ অর্থবছরে যে পরিমাণ রাসায়নিক সার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, তা চাহিদার বিপরীতে অনেক কম।

ব্যবসায়ীরা জানান, জেলায় বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের (বিসিআইসি) তালিকাভুক্ত ৭৫ জন সার পরিবেশক রয়েছেন।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, চলতি বছর জেলায় ৭৫ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন ইউরিয়া সারের চাহিদার বিপরীতে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৪৫ হাজার ১৭১ মেট্রিক টন। ইউরিয়া সারের ঘাটতি রয়েছে ৩০ হাজার ৩২৯ মেট্রিক টন। টিএসপি সারের চাহিদা ৯ হাজার ৩২০ মেট্রিক টন, বরাদ্দ হয়েছে ৪ হাজার ৬৩৯ মেট্রিক টন। ঘাটতি ৪ হাজার ৬৮১ মেট্রিক টন। এমওপি সারের ৩৯ হাজার ১৩০ মেট্রিক টন চাহিদার বিপরীতে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ১২ হাজার ৮৫১ মেট্রিক টন। এমওপি সারের ঘাটতি ২৬ হাজার ২৭৯ মেট্রিক টন। ৪০ হাজার ৭৫০ মেট্রিক টন ডিএপি সারের চাহিদার বিপরীতে বরাদ্দ হয়েছে ২৫ হাজার ৩২৫ মেট্রিক টন। ডিএপি সারের ঘাটতি ১৫ হাজার ৪২৫ মেট্রিক টন। বর্তমান সরবরাহ ও বিতরণব্যবস্থা সন্তোষজনক হওয়া সত্ত্বেও আবাদি জমির পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ায় কৃষক পর্যায়ে অতিরিক্ত সারের চাহিদা লক্ষ করা যাচ্ছে।

১৯৯৬ সাল থেকে প্রতি বস্তা সারের পরিবহন খরচসহ কমিশন দেওয়া হচ্ছে ১০০ টাকা করে। ব্যবসায়ীরা প্রতি বস্তা সারের কমিশন বৃদ্ধি করে ২০০ টাকা করার দাবি জানান।

স্মারকলিপিতে ব্যবসায়ীরা প্রতি বস্তা সারের কমিশন ১০০ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ২০০ টাকা করার দাবি জানান। স্মারকলিপি প্রদানকালে সার ব্যবসায়ীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার অ্যাসোসিয়েশন নীলফামারী জেলা শাখার (বিএফএ) সভাপতি আবদুল ওয়াহেদ সরকার, সাধারণ সম্পাদক তাপস কুমার সাহা, সহসভাপতি মো. তসলিম, চিত্তরঞ্জন সরকার, মো. রজব আলী, মো. রশিদুল ইসলাম প্রমুখ।

আবদুল ওয়াহেদ সরকার বলেন, ‘চলতি বছর (২০২২-২৩) কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে যে পরিমাণ রাসায়নিক সারের চাহিদা দেওয়া হয়েছে, তার চেয়ে অনেক কম বরাদ্দ পাওয়া গেছে। এই পরিমাণ সার দিয়ে কৃষকদের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব নয়। এ ছাড়া ১৯৯৬ সাল থেকে প্রতি বস্তা সারের পরিবহন খরচসহ কমিশন দেওয়া হচ্ছে ১০০ টাকা করে। বর্তমানে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি, পরিবহনের খরচ বৃদ্ধি, কর্মচারীর বেতন-ভাতা বৃদ্ধি, দোকানের ভাড়া বৃদ্ধি, বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধিসহ সব জিনিসের দাম বেড়ে যাওয়ায় ব্যবসায়ীদের লোকসান গুনতে হচ্ছে। এ অবস্থায় আমরা চাহিদা অনুযায়ী সার সরবরাহ নিশ্চিত এবং ২০০ টাকা কমিশনের দাবি করেছি। পাশাপাশি আমরা নীলফামারী বাফার গুদামে বিসিআইসির টিএসপি ও ডিএপি সার সরবরাহ করার আবেদন করেছি।’

স্মারকলিপি গ্রহণের কথা নিশ্চিত করে জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন বলেন, সার ব্যবসায়ীদের দাবির বিষয়টি সুপারিশসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।