ত্বকীর ঘাতকদের আইনের আওতায় আনার দাবি

ত্বকী হত্যার চিহ্নিত ঘাতকদের গ্রেপ্তার ও বিচার শুরু করার দাবি জানিয়ে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের আয়োজনে মোমশিখা প্রজ্জ্বালন কর্মসূচি। সোমবার সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জের আলী আহাম্মদ চুনকা নগর পাঠাগার ও মিলনায়তন প্রাঙ্গণে
ছবি: প্রথম আলো

নারায়ণগঞ্জের মেধাবী ছাত্র তানভীর মুহাম্মদ ত্বকীর ঘাতকদের আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবি জানিয়েছেন নিহত ত্বকীর বাবা রফিউর রাব্বি। আজ সোমবার সন্ধ্যায় নগরের আলী আহাম্মদ চুনকা নগর মিলনায়তন প্রাঙ্গণে ত্বকী হত্যা ও বিচারহীনতার ১৩০ মাস উপলক্ষে মোমশিখা প্রজ্বালন কর্মসূচিতে তিনি এ দাবি জানান।

ত্বকী হত্যার পর থেকে ঘাতকদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে প্রতি মাসের ৮ তারিখে ধারাবাহিকভাবে মোমশিখা প্রজ্বালন কর্মসূচি পালন করে আসছে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোট।

সংগঠনের সভাপতি জিয়াউল ইসলাম কাজলের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ধীমান সাহা জুয়েলের সঞ্চালনায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে ত্বকীর বাবা সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রফিউর রাব্বি ছাড়াও বক্তব্য দেন নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটির সভাপতি এ বি সিদ্দিক, সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের সদস্য সচিব হালিম আজাদ, দৈনিক খবরের পাতার সম্পাদক মাহাবুবুর রহমান, সাংস্কৃতিক জোটের সাবেক সভাপতি ভবানী শংকর রায়, সিপিবি জেলা সভাপতি হাফিজুল ইসলাম, বাসদের জেলা সদস্যসচিব আবু নাঈম, ন্যাপের জেলা সাধারণ সম্পাদক আওলাদ হোসেন, গণসংহতি আন্দোলনের জেলা সমন্বয়ক তরিকুল সুজন এবং সামাজিক সংগঠন সমমনার সাবেক সভাপতি দুলাল সাহা।

এত দিনেও ত্বকী হত্যায় জড়িত ব্যক্তিদের বিচার নিশ্চিত না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন বক্তারা। ত্বকীসহ সাগর-রুনি, তনু ও নারায়ণগঞ্জের আশিক, চঞ্চল, মিঠু ও ভুলু হত্যার বিচার দাবি করে তাঁরা বলেন, আজ দেশে ও বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ ত্বকী হত্যার বিচার চাইছেন। সরকার মানুষের এ দাবি ও প্রতিবাদের ভাষা বুঝবে বলে আশা প্রকাশ করেন তাঁরা।

সরকারের সমালোচনা করে রফিউর রাব্বি বলেন, ‘তারপরও আমরা দাবি করব, এবার দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে সরকার ব্যবস্থা নেবে, জনগণের পক্ষ নেবে। ত্বকীর ঘাতকদের আইনের আওতায় আনবে। সাগর-রুনি, তনুসহ নারায়ণগঞ্জের সব হত্যার বিচার করবে, সরকার জনগণের সাংবিধানিক অধিকার রক্ষায় কাজ করবে, ধ্বংসস্তূপ থেকে বিচারব্যবস্থাকে তুলে আনবে।’

২০১৩ সালের ৬ মার্চ নগরের শায়েস্তা খাঁ সড়কের বাসা থেকে বের হওয়ার পর নিখোঁজ হয় ত্বকী। এর দুই দিন পর ৮ মার্চ শীতলক্ষ্যা নদীর কুমুদিনী খাল থেকে ত্বকীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই বছরের ১২ নভেম্বর আজমেরী ওসমানের সহযোগী সুলতান শওকত ভ্রমর আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে জানান, আজমেরী ওসমানের নেতৃত্বে ত্বকীকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়। ২০১৪ সালের ৫ মার্চ তদন্তকারী সংস্থা র‌্যাব সংবাদ সম্মেলন করে জানায়, নারায়ণগঞ্জের ওসমান পরিবারের নির্দেশে তাদেরই টর্চার সেলে ১১ জন মিলে ত্বকীকে হত্যা করেছেন। অচিরেই তারা অভিযোগপত্র আদালতে পেশ করবে। কিন্তু সে অভিযোগপত্র আজও আদালতে পেশ করা হয়নি।

রফিউর রাব্বি বলেন, ত্বকীর ঘাতক ওসমান পরিবার নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার প্রয়োজনে সরকার ও প্রশাসনের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে থাকতে চায়। প্রশাসন ছাড়া তারা নিজেদের নিরাপদ মনে করে না। এই ঘাতকেরা যখন জনগণকে নিরাপত্তা দিতে চায়, জনগণ তখন ভয় পায়।