হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলায় ভূপর্যটক রামনাথ বিশ্বাসের বসতভিটায় অবশেষে স্মৃতি পাঠাগারের সাইনবোর্ড লাগিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। আজ বুধবার দুপুরে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কার্যালয়ের পক্ষ থেকে তাঁর বসতভিটার একাংশে সাইনবোর্ডটি লাগানো হয়।
রামনাথ বিশ্বাসের দখল হয়ে যাওয়া ৪ একর জমির মধ্যে ১ একর ১৬ শতাংশ ভূমি জেলা প্রশাসকের নামে রেকর্ডভুক্ত আছে। প্রশাসন ওই জমিতে রামনাথ বিশ্বাস স্মৃতি পাঠাগার নির্মাণের জন্য স্থান নির্ধারণ করেছে। আজ বুধবার সেখানে সাইনবোর্ড টানানো হয়েছে। এ সময় স্থানীয় ভূমি কার্যালয় ও বানিয়াচং থানার একদল পুলিশ সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
রামনাথ বিশ্বাসের বসতভিটা পুনরুদ্ধার করে সেখানে একটি পাঠাগার স্থাপনের দাবি জানিয়ে নানা আন্দোলন করে আসছিল ‘ভূপর্যটক রামনাথ বিশ্বাসের বসতভিটা পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণ কমিটি’।
উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বানিয়াচং উপজেলার আমীরখানী মৌজায় ভূপর্যটক রামনাথ বিশ্বাসের পারিবারিক বসতভিটায় প্রায় সাড়ে ৪ একর ভূমি দখল করেন স্থানীয় আবদুল ওয়াহেদ মিয়া নামের এক ব্যক্তি। ইতিমধ্যে তিনি ওই ভূমির ৩ একর জালজালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে নিজেদের নামে রেকর্ড করে নিয়েছেন। ওয়াহেদ একসময় বিএনপি-জামায়াত করতেন। পরে তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দেন। তাঁর বিরুদ্ধে দলীয় পরিচয়ের জোরে রামনাথের বাড়ি দেখতে যাওয়া পর্যটক, বাইসাইকেল রাইডার ও সাংবাদিকদের ওপর বিভিন্ন সময় হামলার অভিযোগ আছে। সর্বশেষ ১১ সেপ্টেম্বর সাংবাদিক রাজীব নূরসহ চারজন পেশাগত দায়িত্বের অংশ হিসেবে বাড়িটি দেখতে গেলে তাঁদের ওপর হামলা করা হয়।
বানিয়াচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পদ্মাসন সিংহ বলেন, ৪ একরের মধ্যে ১ একর ১৬ শতাংশ ভূমি জেলা প্রশাসনের খতিয়ানভুক্ত। সেই জমি প্রশাসনের দখলে আছে। সময়–সুযোগ ও বরাদ্দ সাপেক্ষে সেখানে রামনাথ বিশ্বাসের নামে একটি স্মৃতি পাঠাগার স্থাপনের প্রস্তাব করা হয়েছে।
হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার বিদ্যাভূষণপাড়ায় ১৮৯৪ সালের ১৩ জানুয়ারি রামনাথ বিশ্বাসের জন্ম। বাবা বিরাজনাথ বিশ্বাস আর মা গুণময়ী দেবীর দুই সন্তানের মধ্যে তিনি ছিলেন দ্বিতীয়। ১৯৫৫ সালের ১ নভেম্বর কলকাতায় শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন বিশ্বজয়ী ভূপর্যটক রামনাথ বিশ্বাস। তাঁর লেখা ভ্রমণবিষয়ক ৪০টির মতো বই আছে।