নাগরিক সভার অনুমতি না পেয়ে সিলেট নগরের রেজিস্টারি মাঠের ফটকে অনড় অবস্থান নেন সিটিমেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। শুক্রবার বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে
ছবি: আনিস মাহমুদ

সিলেট নগরের রেজিস্টারি মাঠে নাগরিক সভা করার জন্য প্রথমে অনুমতি দেয়নি পুলিশ। শুক্রবার বিকেলে রেজিস্টারি মাঠে মঞ্চ নির্মাণের জন্য শ্রমিকেরা উপকরণ নিয়ে গেলে পুলিশ সদস্যদের বাধার মুখে পড়েন। রেজিস্টারি মাঠের ফটকে আসার পর মেয়ক আরিফুলকেও আটকে দেওয়া হয়। এরপর অনড় অবস্থানের ঘোষণা দেওয়ার পর সিদ্ধান্ত পাল্টায় পুলিশ।

বিএনপির একাধিক সূত্র জানায়, শ্রমিকদের মঞ্চ নির্মাণে বাধা দেওয়ার খবর পেয়ে বিকেল সাড়ে চারটার দিকে মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী রেজিস্টারি মাঠে পৌঁছান। তবে পুলিশ মাঠের প্রধান ফটক বন্ধ করে রাখায় তিনি ভেতরে ঢুকতে পারছিলেন না।এরপর মাঠের বাইরে ফটকের সামনে অবস্থান নেন আরিফুল হক চৌধুরী।

এ সময় নাগরিক সভা করার অনুমতি না পাওয়া পর্যন্ত ফটকের সামনেই অবস্থান করবেন বলে ঘোষণা দেন তিনি। খবর পেয়ে তাঁর সমর্থকেরা নগরের বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে এসে সেখানে আসতে থাকেন। এ অবস্থায় পুলিশ আগের সিদ্ধান্ত বদলে মেয়রকে সভা করার অনুমতি দেয়। এরপর নেতাকর্মীদের নিয়ে মাঠে প্রবেশ করেন তিনি।

সন্ধ্যা পৌনে ছয়টার দিকে ফটক খুলে দেওয়া হলে মঞ্চ নির্মাণের কাজ শুরু হয়। এ সময় আরিফুল হক চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, আগামীকাল বেলা তিনটায় পূর্বনির্ধারিত সভা অনুষ্ঠিত হবে। সেখানেই তিনি প্রার্থিতার বিষয়টি স্পষ্ট করবেন।

সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) সুদীপ দাস প্রথম আলোকে বলেন, সার্বিক অবস্থা বিবেচনায় মেয়রকে নাগরিক সভা করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

এর আগে দুপুরে সুদীপ দাস প্রথম আলোকে বলেন, নাগরিক সভা ঘিরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে—এমন গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীকে সভা না করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।

পুলিশ সিদ্ধান্ত পাল্টে নাগরিক সভার অনুমতি দিলে সমর্থকদের নিয়ে রেজিস্টারি মাঠে প্রবেশ করেন আরিফুল হক চৌধুরী
ছবি: আনিস মাহমুদ

গত মঙ্গলবার সিলেটের পুলিশ কমিশনার বরাবর চিঠি দিয়ে নাগরিক সভা করার বিষয়টি অবহিত করেছিলেন জানিয়ে বিকেল পৌনে পাঁচটায় সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘এরপরও এভাবে হঠাৎ সভা আয়োজনে পুলিশের বাধা দেওয়ার বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। আমাকে মাঠের ভেতরে ঢুকতে না দেওয়াও বড় ধরনের অসভ্যতা।’

মেয়র আরিফুলের ঘনিষ্ঠ কয়েকজনের ভাষ্য, বর্তমান সরকারের অধীনে বিএনপি কোনো নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না। এ অবস্থায় বিএনপির মনোনয়নে টানা দুবার মেয়র নির্বাচিত হওয়া আরিফুল হক চৌধুরীকে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য নগরের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অনুরোধ করেছেন। তবে তিনি মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন কি না, এটা স্পষ্ট করতে কিছুদিন আগে নাগরিক সভা করার ঘোষণা দেন। আগামীকাল শনিবার বেলা দুইটায় রেজিস্টারি মাঠে এ সভা হওয়ার কথা। এতে ৪২টি ওয়ার্ডের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে উপস্থিতি থাকার আহ্বান জানিয়েছিলেন মেয়র আরিফুল হক।

নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোট হবে আগামী ২১ জুন। মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ২৩ মে। মনোনয়নপত্র বাছাই ২৫ মে ও প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ১ জুন। প্রতীক বরাদ্দ করা হবে ২ জুন।