যৌন হয়রানির অভিযোগে নোয়াখালী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের পদাবনতি

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
ফাইল ছবি

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের যৌন হয়রানি করার অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সহকারী অধ্যাপককে প্রভাষক পদে পদাবনতি করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের কার্যালয় থেকে এ–সংক্রান্ত একটি দাপ্তরিক আদেশ জারি করা হয়েছে। রেজিস্ট্রারের দায়িত্বে থাকা সহ–উপাচার্য মোহাম্মদ আবদুল বাকী ওই চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন।

গত বছরের ১৪ ও ১৬ আগস্ট একটি বিভাগের ২০১৭-১৮ ও ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রীরা ডিন বরাবর লিখিত অভিযোগ জমা দেন।

আরও পড়ুন

রেজিস্ট্রারের কার্যালয় থেকে জারি করা দাপ্তরিক আদেশে বলা হয়েছে, ওই সহকারী অধ্যাপকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির যে অভিযোগ করা হয়েছে, তা যৌন হয়রানি প্রতিরোধ সেলের কাছে সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়েছে। মুশফিকুর রহমানের অপরাধের মাত্রা বিবেচনা করে এবং সংশ্লিষ্ট কমিটির সুপারিশের আলোকে গত ২৮ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের রিজেন্ট বোর্ডে তাঁর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

শাস্তিগুলো হলো—আগামী পাঁচ বছরের জন্য ওই শিক্ষককে প্রভাষক পদে পদাবনতি করা হলো। ভবিষ্যতে তাঁর বিরুদ্ধে এ ধরনের কোনো অভিযোগ উত্থাপিত হলে তাঁকে স্থায়ীভাবে চাকরিচ্যুত করা হবে। এই সময়ে তিনি পদোন্নতি কিংবা আপগ্রেডেশনের কোনো আবেদন করতে পারবেন না এবং শিক্ষাছুটিতে যেতে পারবেন না। বিভাগের বর্তমান যেসব ব্যাচের শিক্ষার্থী তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন, ওই ব্যাচগুলোর কোনো একাডেমিক (ক্লাস ও পরীক্ষা) ও কোনো প্রশাসনিক কাজে অংশ নিতে পারবেন না। তবে বিভাগের নতুন ব্যাচে তিনি ক্লাস ও পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন। তাঁর ক্লাস কার্যক্রম বিভাগীয় চেয়ারম্যান নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করবেন।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের আগস্ট মাসে শিক্ষা বিভাগের কয়েকজন ছাত্রী ডিন বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন। লিখিত অভিযোগে ছাত্রীরা ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়ন, নানাভাবে হয়রানি ও মানসিক নির্যাতন, পরীক্ষায় নম্বর কম দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ছাত্রীদের রাতে ডেকে নিয়ে নিজ অফিস কক্ষে বসিয়ে রাখা, পরীক্ষায় খেয়ালখুশিমতো নম্বর দেওয়া, নম্বর টেম্পারিং, পরীক্ষার আগে পছন্দের শিক্ষার্থীদের প্রশ্ন বলে দেওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরেন। এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সিদ্ধান্তের বিষয়ে জানার জন্য উপাচার্য মো. দিদার-উল-আলম ও রেজিস্ট্রারের দায়িত্বে থাকা মোহাম্মদ আবদুল বাকীর মুঠোফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তাঁরা সাড়া দেননি।

শাস্তি পাওয়া শিক্ষক আজ বেলা সাড়ে তিনটার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, তিনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে এ-সংক্রান্ত কোনো চিঠি পাননি। তাই এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চান না।