রামগঞ্জে আওয়ামী লীগ নেতার প্রতিদ্বন্দ্বী স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা

দেলোয়ার হোসেন

লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেনের প্রতিদ্বন্দ্বী লক্ষ্মীপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ইমতিয়াজ আরাফাত। দলীয় প্রতীক না থাকায় এই উপজেলায় শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে পড়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী। পাশাপাশি ভোটকে কেন্দ্র করে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছেন দলীয় নেতা-কর্মীরা।

এবার রামগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন চারজন প্রার্থী। তাঁরা হলেন দেলোয়ার হোসেন (মোটরসাইকেল), ইমতিয়াজ আরাফাত (আনারস), ফয়েজ বক্স (দোয়াত কলম) ও মো. মোশাররফ (ঘোড়া)। তবে ফয়েজ ও মোশাররফের কোনো প্রচার-প্রচারণা দেখা যায়নি। এ কারণে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে দেলোয়ার হোসেন ও ইমতিয়াজ আরাফাতের মধ্যে। নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে তিনজন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে চারজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

চেয়ারম্যান প্রার্থী ইমতিয়াজ আরাফাত বলেন, ‘লক্ষ্মীপুরে আলোচিত যুবলীগ নেতা নোমান ও ছাত্রলীগ নেতা রাকিব ইমাম হত্যা মামলার আসামি দেওয়ান ফয়সাল আমার প্রতিদ্বন্দ্বী দেলোয়ার হোসেনের ছোট ভাই। প্রকাশ্যে আমার নেতা-কর্মীদের নানা রকম হুমকি দেওয়া হচ্ছে। তবে আমি শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চাই। ভোটের মাঠে মার খেলেও প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও তাঁর নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সংঘাতে না জড়ানোর নির্দেশ দেওয়া আছে আমার নেতা-কর্মীদের। দেলোয়ার হোসেনের জনপ্রিয়তা না থাকায় তিনি নির্বাচনকে সংসদ সদস্য দিয়ে প্রভাবিত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছেন। অস্ত্র আর সন্ত্রাসের রাজনীতি নয়, জনগণ ও নেতা-কর্মীরা ভালোবাসা চাই আমি।’

দেলোয়ার হোসেনকে সমর্থন দিয়েছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য আনোয়ার হোসেন খান। তিনি এমপির প্রার্থী হিসাবে এলাকায় প্রচারণা চালাচ্ছেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে চেয়ারম্যান প্রার্থী দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘ইমতিয়াজের বাবার সঙ্গে আমি রাজনীতি করেছি বহু বছর। রাজনৈতিক শিষ্টাচার না মেনে তিনি এখন মিথ্যাচার করছেন। মিথ্যা অভিযোগ উত্থাপন করছেন। এটি দুঃখজনক। নির্বাচনকে সামনে রেখে বহিরাগত অস্ত্রধারীরা এলাকায় অবস্থান করেছে। তাঁরা আমার কর্মী সমর্থকদের হুমকি দিচ্ছেন।’

ইমতিয়াজ আরাফাত

টানা ১৫ বছর রামগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন ইমতিয়াজ আরাফাতের বাবা মোহাম্মদ শাহজাহান। তাঁর সঙ্গে সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন দেলোয়ার হোসেন। লক্ষ্মীপুর-১ (রামগঞ্জ) আসন থেকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন মোহাম্মদ শাহজাহান। তিনি বর্তমানে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান।

এবার আগে থেকেই নির্বাচনে না আসার ঘোষণা দিয়েছে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। গতবারের মতো এবারও চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ বনাম আওয়ামী লীগ লড়াই হচ্ছে নির্বাচনে। দলটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মাঠে আওয়ামী লীগের শক্ত প্রতিপক্ষ নেই। আবার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কেউ যেন নির্বাচিত হতে না পারে দল থেকে এমন নির্দেশনা আছে। এখন ব্যক্তি ইমেজই প্রার্থীদের ভরসা।

স্থানীয় ভোটার মো. ছানা উল্যা বলেন, আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রে যেতে নিষেধ করেছেন সরকার দলীয় নেতা-কর্মীরা। ভোটের আগের রাতে ককটেল বিস্ফোরণসহ নানাভাবে ভয়ভীতি দেখানো হয় ভোটারদের। মারধরও করা হয়। কিন্তু এবারের পরিস্থিতি উল্টো। সরকার দলের দুই প্রার্থী ও তাদের লোকজন এবার অনুরোধ করছেন ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার জন্য।

২১ মে ভোট অনুষ্ঠিত হবে রামগঞ্জ উপজেলায়। নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট প্রিয়াংকা দত্ত বলেন, প্রার্থীদের কয়েকটি অভিযোগ পেয়েছি, এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।