কদমতলী বাসস্ট্যান্ডের টিকিট বিক্রেতা ফজলুর রহমান বলেন, ‘আমরা এখনো আগের ভাড়া অনুযায়ী হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, শ্রীমঙ্গলের টিকিট বিক্রি করছি। ভাড়া বাড়ানো হয়নি। যাত্রীদের সঙ্গেও ঝামেলা হচ্ছে না। তবে আজকের মধ্যে ভাড়া না বাড়ালে গাড়ি বন্ধ হয়ে যেতে পারে।’ তিনি বলেন, যাত্রীবাহী বাসগুলো যাচ্ছে। তবে আগের তুলনায় স্ট্যান্ডে কিছুটা কম আসছে।
সিলেট-হবিগঞ্জ সড়কের বাসচালক সেলিম আহমদ প্রথম আলোকে বলেন, সিলেট থেকে হবিগঞ্জ যাতায়াত করতে ৬০ লিটার ডিজেল খরচ হয়। তেলের দাম বাড়ায় এখন যাওয়া-আসায় খরচ বেড়েছে প্রায় দুই হাজার টাকা। ভাড়া না বাড়ালে বাস চালানো অসম্ভব হবে। ওই বাসের যাত্রী মুশাহিদ মিয়া হবিগঞ্জে যাচ্ছিলেন। তিনি বলেন, আগের ১৮০ টাকা ভাড়া দিয়েই তিনি টিকিট কেটেছেন।
নগরের ধোপাদীঘির পাড়ে লেগুনাস্ট্যান্ড থেকে জৈন্তাপুর, দরবস্ত ও কানাইঘাটে যাত্রী পরিবহন করা হয়। লেগুনায় জনপ্রতি ১৫ থেকে ২০ টাকা ভাড়া বাড়ানো হয়েছে। যদিও লেগুনা চলে গ্যাসে। ভাড়া বাড়ানোর বিষয়ে নুরুল ইসলাম নামের এক চালক বলেন, তেলের দাম বেড়েছে, সেই সঙ্গে জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়েছে। এ জন্য ভাড়া বাড়ানো হয়েছে। এ নিয়ে যাত্রীদের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
জৈন্তাপুরের যাত্রী সাদিকুর রহমান বলেন, আগে ৪৫ টাকার ভাড়ায় জৈন্তাপুর বাজার পর্যন্ত যাওয়া যেত। এখন সেই ভাড়া ৬০ টাকা দাবি করছেন চালক ও সহকারীরা। দর-কষাকষি করে ৫৫ টাকায় উঠেছেন তিনি।
এদিকে সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কে বাসের ভাড়া জনপ্রতি ২০ টাকা বাড়ানো হয়েছে। কুমারগাঁও বাসস্ট্যান্ডে কথা হয় সুনামগঞ্জ শহরের বাসিন্দা জাকারিয়া আহমেদের সঙ্গে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল বিকেলে পরিবারের পাঁচ সদস্য নিয়ে চিকিৎসার জন্য জনপ্রতি ১২০ টাকা ভাড়া দিয়ে তিনি সিলেটে আসেন। আজ সুনামগঞ্জে ফেরার জন্য বাসস্ট্যান্ডে এসে শোনেন, ভাড়া জনপ্রতি ২০ টাকা বাড়ানো হয়েছে।
এ ছাড়া সোবহানীঘাট থেকে তামাবিল সড়কে বাসের সংখ্যা কমেছে। তবে গেটলক পরিবহনগুলো নির্দিষ্ট সময়ে চলাচল করছে। সিলেট-জাফলং সড়কের বাসচালক হাসান আহমদ বলেন, ‘মালিকের নির্দেশে আজ গাড়ি বন্ধ রেখেছি। এখন বাসস্ট্যান্ডে বসে অবসর সময় পার করছি। তেলের দাম বাড়ায় আরও কয়েকটি বাস বন্ধ আছে।’
সিলেট জেলা পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শাহ জিয়াউল কবির বলেন, সিলেটের কিছু পরিবহনমালিক তাঁদের যানবাহন বন্ধ রেখেছেন। শুধু সুনামগঞ্জে সড়কে ২০ টাকা ভাড়া বাড়ানো হয়েছে। যাত্রীরা মেনে নেওয়ায় ভাড়া নিয়ে কোনো সমস্যা হচ্ছে না। তিনি বলেন, শুক্র ও শনিবার যাত্রীদের সংখ্যা কম থাকে। এ জন্য খুব বেশি প্রভাব পড়ছে না। তেলের দাম বেড়েছে গতকাল মধ্যরাত থেকে। বাসগুলো এর আগেই পরের দিনের জন্য জ্বালানি সংগ্রহ করে।
জিয়াউল কবির আরও বলেন, বর্ধিত জ্বালানিতে যানবাহন চালালে অবশ্যই ভাড়া বাড়াতে হবে। তাঁরা আশা করছেন, আজকের মধ্যে ভাড়া সমন্বয় করা হবে। বিকেল চারটায় সিলেটের বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশনের (বিআরটিসি) কার্যালয়ে এ নিয়ে বৈঠক আছে বলে তিনি জানান।